03 April 2017

লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় : আলোকিত এক বিদ্যাপীঠ


লাকসাম পৌর শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রতিষ্ঠিত লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে তত্কালীন জমিদার অতুল কৃষ্ণ রায় চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন। তখনই এটি অতুল হাই স্কুল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পৌর শহর পশ্চিমগাঁও নবাব ফয়জুন্নেসা ও বদরুন্নেছা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভের পর তত্কালীন জমিদার অতুল কৃষ্ণ রায় চৌধুরী এলাকার শিক্ষার প্রসারে লাকসাম অতুল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভের কারণে এলাকায় শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। পরবর্তীকালে সরকারের পাইলট স্কিমের আওতায় ১৯৮২ সালে এক কালের অতুল হাই স্কুলের নাম পরিবর্তন হয়ে লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামকরণ হয়।

আগের তুলনায় লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। উন্নয়নের পাশাপাশি লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সর্বমোট শিক্ষক ২৭ জন, কর্মচারী ৬ জন ও অফিস সহকারী ২ জনসহ রয়েছে শক্তিশালী ম্যানেজিং কমিটি। বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ৩টি বিজ্ঞানাগার, ১টি পাঠাগার। কম্পিউটার ও কারিগরি শাখায় ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগ চালু  রয়েছে।

SSC, HSC and Other Exam Result Archive


বিদ্যালয়টিতে ড্রামসেট নিয়ে রয়েছে স্কাউট দল। স্কাউট কার্যক্রম বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে ভূমিকা রাখে।
বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও লেখাপড়ার মান উন্নয়নে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় ব্যতিক্রমধর্মী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। বিদ্যালয়টিতে (১) লেখাপড়ার মান উন্নয়ন, নিয়ম-শৃঙ্খলা, অবাঠামোগত সুবিধা-সুসজ্জিত করা হয়েছে। (২) ছাত্রদের জন্য ব্যাচ, টাই নির্ধারিত পোশাক (৩) অভিভাবকরা তার সন্তান সম্পর্কে দৈনন্দিন লেখাপড়ার বিষয়ে জানার জন্য আকর্ষণীয় ও উন্নতমানের ডাইরির ব্যবস্থা। (৪) ছাত্রদের লেখাপড়ার তদারকি দেখতে শিক্ষকদের রাতে ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া। (৫) প্রতিদিন সকাল বেলায় নিয়মিত কোচিংয়ের ব্যবস্থাকরণ। (৬) এক বিষয়ের ওপর যেসব ছাত্র ফেল করছে এই রকম ৩শছাত্রকে বের করে দেয়া। (৭) বিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র ভর্তি করানো। (৮) প্রতি বিষয়ে সাপ্তাহিক শ্রেণী পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। (৯) প্রতি বিষয়ে পাস নম্বর ৪০ এবং সব বিষয়ে উত্তীর্ণ না হলে উপরের শ্রেণীতে প্রমোশন পাবে না। (১০) বিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ৩য় শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী অর্থাত্ প্রাথমিক শাখা চালু। (১১) বিদ্যালয়ে সপ্তাহে বিতর্ক ক্লাস ও অন্যান্য পাঠক্রমিক কার্যবলীসহ পূর্ণ ৮ ঘণ্টা ক্লাস চালু।
এছাড়া বার্ষিক সিলেবাস প্রদানসহ বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজনসহ মেধাবী ও কৃতিত্বপূর্ণ স্থান অধিকারীদের বিশেষভাবে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা।

লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ঢুকেই চোখে পড়ে অনার্স বোর্ড, অনার্স বোর্ডে মেধাবী ও কৃতিত্বের অধিকারীরা স্থান পায়। জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় প্রতি বছর ৮/১০ জন ছাত্র মেধার স্বাক্ষর রাখে। যা দক্ষিণ কুমিল্লার আর কোনো বিদ্যালয়ে নেই। আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় পাসের হার ভালো। এলাকার গরিব ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবী ছাত্রদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে মোঃ শাহজাহান মোল্লা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নতি ও লেখাপড়ার মান উন্নয়নের দিক থেকে লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এগিয়ে রয়েছে। সব মিলিয়ে লাকসাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সুনাম, সুখ্যাতি ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে যাবেএটি সবার কামনা।


শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।