11 August 2016

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনঃ কে হবেন বিএনপির প্রার্থী ?


কুমিল্লা রিপোর্ট২৪ ডেস্কঃ ঢামাঢোল বেজে উঠতে শুরু করেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনের। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর কিংবা পরবর্তী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্টিতব্য হতে যাচেছ এ নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলসহ সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেউ প্রত্যক্ষ কেউবা পরোক্ষ ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা রয়েছে সতর্ক পর্যবেক্ষনে। কারণ, ঢাকা-চট্রগ্রাম, উপজেলা এবং সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যে ভাবে চর দখলের মত কেন্দ্র  দখল হয়েছে সেজন্য নির্বাচনের ব্যাপারে আগাম কথা বলতে কেউ রাজি হচেছ না। তবে ভিতরে ভিতরে কেউ কেউ নিজেদের মাঠ সম্পর্কে ধারণা নিতে শুরু করেছেন।
আগামী কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে গত পক্ষকাল ধরে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে আলাপ করে দেখা গেছে, তাদের বক্তব্য, আগে আমরা সরকারী দলের মনোভাব বুঝার চেষ্টা করছি। সরকার আসলে কি চায় ? তারা কি সুষ্ঠু ও গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়,  না, বিগত নির্বাচনের মত করবে। তবে একটা কথা বেশ স্পষ্ট জানা গেছে যে, নির্বাচন যে ভাবেই হোক না কেন বিএনপি মাঠে থাকবে।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রায় বেশীর ভাগ সম্ভাব্য প্রার্থীরা জানিয়েছেন, বর্তমান মেয়র ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা মনিরুল হক সাক্কু যদি নির্বাচন করে তাহলে তারা প্রার্থীতা চাইবেন না বা নির্বাচন করবেন না। কিন্ত এর বাহিরে তারা তাদের প্রার্থীতা দলের কাছে চাইবেন এবং দল যাকেই মনোনয়ন দেন তাকেই মেনে নিবেন বলে তারা জানিয়েছে এ প্রতিবেদককে।
বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা হলো, বর্তমান মেয়র , কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুল হক সাক্কু, বিএনপির চেয়ারার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি  মনিরুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির প্রভাবশালী  সদস্য ও আলহাজ্ব নুরুল হক ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট  কাউসার জামান বাপ্পী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজের ছাত্রছাত্রী সংসদের সাবেক ভিপি ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাজী আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর মুন্শী।
আগামী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছেন জানতে চাইলে বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা  মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি তো মাঠেই আছি। এই মাত্র আমি জাঙ্গালিয়া বাস ষ্ট্যান্ড থেকে এলাম। আমি তো কাজেই আছি। মাঠের বাহিরে তো নেই। নির্বাচনের বিষয়টা হচ্ছে, এখানে আমার দলের সিদ্ধান্তের বিষয় আছে। আবার সরকারের মুভমেন্টও বুঝতে হবে। অনেক কিছু বুঝার বিষয় আছে। হুট করে এখনি বলা যাবে না। আমি পদের জন্য  কারো মায়ের কোল খালি করতে চাই না।
বিএনপির চেয়ারার্সনের নব নির্বাচিত উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরীর কাছে সিটি নির্বাচন সম্পর্কে   জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি যদি মনে করি জনগন ভোট দিতে পারবে ,আগের রাতে ভোট হয়ে যাবে না , কুমিল্লাবাসী যদি মনে করে আমি মেয়র হলে কুমিল্লার উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারব এবং আমার দল যদি মনে করে আমাকে দিয়ে এ দায়িত্ব পালন করাবে তবে আমার দীর্ঘ উন্নয়ন অভিজ্ঞতা দিয়ে কুমিল্লাকে মেট্রোপলিটন মহানগরীতে এবং ঢাকার বিকল্প রাজধানী হিসেরেব গড়ে তোলার একটি আকাংখা আমার মধ্যে তীব্র ভাবে কাজ করছে।
জেলা বিএনপির প্রভাবশালী সদস্য ও আলহাজ্ব নুরুল হক ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট কাউসার জামান বাপ্পী বলেন, জীবনের শুরু থেকেই বিএনপি করে আসছি। বড় হয়েছি এই কুমিল্লা শহরেই। কাজেই নির্বাচনের জন্য আমার শুভার্থীরাতো আমাকে সব সময় বলে আসছে। কিন্ত আমি আসলে এ ব্যাপারে এখনো চিন্তা করিনি। কারণ, আমাদের বর্তমান মেয়র সাক্কু ভাইতো আছেই। তিনি যদি না করেন সে ক্ষেত্রে দল যদি আমাকে প্রয়োজন মনে করে তাহলে আমার প্রার্থী হতে কোন আপত্তি থাকবে না।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারী কলেজের ছাত্রছাত্রী সংসদের সাবেক ভিপি ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাজী আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম বলেন, আমি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধি ছিলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম , এখন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। কাজেই বুঝতে পারছেন, তরুণও যুবকদের সাথে আমার একটা নিভির সম্পর্ক আছে। নতুন প্রজন্মের আমার কর্মী সমর্থকরা গত উপজেলা নির্বাচনেই তারা আমাকে প্রার্থী হতে বলেছে আমি রাজি হইনি। কারণ, সিনিয়ররা আছে বিষয়টি তারাই দেখবেন। আগামী সিটি নির্বাচনে বর্তমান মেয়র সাক্কু ভাই আছেন, তিনি যদি নির্বাচন করেন তাহলে তো আর কোন কথা নেই। না করলে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। আমাদের নেতা রাবেয়া চৌধুরী ও হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াছিন ভাই যে সিদ্ধান্ত দিবেন আমি সেটাই মেনে নেব।
কুমিল্লা সিটির দক্ষিণ অংশের ভোটার ও জেলা বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির মুন্শী বলেন, আসন্ন সিটি নির্বাচন করার জন্য আমি ইতিমধ্যে সিটি এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করে দিয়েছি। কুমিল্লা সিটির দক্ষিনের অবহেলিত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে অবশ্যই নির্বাচন করব।

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: