17 July 2016

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনঃ আ”লীগের সম্ভাব্য ৩ প্রার্থী


কুমিল্লা রিপোর্ট২৪ ডেস্কঃ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চাইবেন তিনজন। এর হলেন কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ নেতা ও ক্রীড়া সংগঠক আরফানুল হক রিফাত, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান এবং তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম। এই মধ্যে পরোক্ষভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন এই তিন মনোনয়ন প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থী। তিনজনই মনোনয়ন পাবেন বলে আশা ব্যক্ত করে বলেছেন মনোনয়ন না পেলেও দলের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবেন।
দেশের প্রাচীনতম পৌরসভা কুমিল্লা পৌরসভা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ পৌরসভাকে নিয়ে ২০১১ সালের ১০ জুলাই গঠন করা হয় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশন গঠনের পর ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। ঐ নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নিলেও জেলা বিএনপির নেতা ও কেন্দ্রীয় সদস্য মনিরুল হক সাক্কু দল থেকে অব্যাহতি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬৫ হাজার ৫ শ ৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঐ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী কুমিল্লা জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা অধ্যক্ষ আফজল খান ৩৬ হাজার ৪ শ ৭১ ভোট পেয়ে হেরে যান। যদিও ঐ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের গ্রুপিংয়ের কারনে আফজল খানকে নির্বাচনে আগের রাতে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছে বলে বরাবরই তিনি অভিযোগ করে আসছেন। সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছিল। 
এ দিকে এবারের আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে তরুণ প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। এই প্রার্থী সংখ্যা তিন জন। কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ.ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহারের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত কুমিল্লা মহানগর যুবলীগ নেতা ও কুমিল্লা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা জেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের বড় ছেলে জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান, তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম পরোক্ষভাবে প্রচার চালাচ্ছেন। শহরে তাদের ছবি সম্বলিত পোষ্টার শোভা পাচ্ছে। তা ছাড়া সাংবাদিকদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন মাসুদ পারভেজ খান ইমরান ও নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম। 
মনোনয়ন প্রত্যাশী আরফানুল হক রিফাত দলের মনোনয়ন পাবেন এই আশা ব্যক্ত করে জানান, আমি মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবো। আমাদের নেতা ও সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আ.ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহারেরও আমার প্রতি সমর্থন রয়েছে। আমি দলীয় মনোনয়ন চাইবো এবং আশা করি পাবো। দল যদি মনোনয়ন না দেয় তাহলে যাকে মনোনয়ন দিবে আমি ও আমাদের সমর্থকরা তার পক্ষেই কাজ করবো। 
আরফানুল হক রিফাত আরো বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে তো আর কোন প্রার্থী নেই। 
গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া কুমিল্লা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ আফজাল খানের ছেলে মাসুদ পারভেজ খান ইমরানও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন। ইতিমধ্যে তার পরোক্ষ প্রচারণাও কুমিল্লার মানুষ দেখতে পাচ্ছে। 
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মাসুদ পারভেজ খান ইমরান জানান, গত সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার মানুষ ৩৮ হাজার ২শ ৯৩ ভোট দিয়ে জানান দিয়েছে কুমিল্লার মানুষের খেদমতে আমাকে চায়। জনগনের ভালবাসার জোরে এবং পারিবারিক সিদ্ধান্তে আমি মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চাইবো। আমাদের বিশ্বাস দল আমাদের নিরাশ করবে না।
তিনি বলেন, দল যদি মনোনয়ন না দেয় তাহলে যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই কাজ করবো। 
অপর দিকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তৃতীয় হওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। গত সিটি নির্বাচনে নানা হুমকি ধমকি বাধা বিপত্তির পরও নিজের অবস্থান প্রমাণ করতে পেরে আত্মবিশ্বাসী তানিম জানান, দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। তিনি বিশ্বাস করেন দলে তৃণমূল পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবে। মনোনয়ন পাবার ব্যাপারে আশাবাদি তিনিও। 
তানিম জানান, মনোনয়ন না পেলে দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই কাজ করবেন তিনি ও তার সমর্থকরা। 

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: