কুমিল্লা রিপোর্ট২৪ ডেস্কঃ একটি নতুন ইস্যু। আরো একটি ঘটনা। এর পর চাপা পড়ে দেশের সব চেয়ে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। গুলশান হামলার প্রেক্ষিতে আবারো হারিয়ে গেল চাঞ্চল্যকর মিতু ও তনু হত্যাকান্ডের মত গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়। গণমাধ্যমগুলোর নজর এখন ঐ দুই হত্যাকান্ড থেকে অনেক দূরে। সবাই ব্যস্ত গুলশান হামলা ও জঙ্গিবাদ ইস্যুতে। তাই আবারো আড়াল হলো মিতু ও তনু হত্যাকান্ড।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনু হত্যা মামলাও থমকে আছে। হত্যার দুধরনের রিপোর্টের ফলে মামলার গতিও অনেকটা থমকে আছে।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন,‘তনু থাকলে ঈদটা অন্য রকম হতো। বড় ছেলে মনে হয় বাড়িতে আইব না। ডরে আইতে চায় না। এবার আমরার ঈদ অইব না।’ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে গত ২০ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর লাশ পাওয়া যায়।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত রোজায়ও মেয়েটা ছিল। সন্ধ্যার আগেই ইফতারি বানাইত। আমার হাইপ্রেশার (উচ্চ রক্তচাপ), তাই কোনো কাজ করতে দিত না। কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে আবাসিক কোয়ার্টারেই সব সময় রোজার ঈদ করছি। কিন্তু এবার গ্রামের বাড়িতে ঈদ করব।’ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে এবার হতভাগ্য পরিবারটি ঈদ করেন।
তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বলেন, ‘গত ১৯ বছরে তারে (তনু) ছাড়া এই প্রথম ঈদ করতাছি। গ্রামের বাড়িতে এসে আসরের নামাজের পর তনুর কবর জিয়ারত করছি। দোয়া ছাড়া আমাদের এখন করার কিছু নেই। আল্লাহ সব দেখছেন, তিনি নিশ্চয়ই মেয়ে হত্যার বিচার করবেন।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার সঙ্গে সন্দেহভাজন কত লোক ধরা হয়। অথচ তনু হত্যার সঙ্গে জড়িত একটা লোকও ধরা পড়ে না। সিআইডি বলছে, ঈদের পর নামবে। আমি চাই বাবুল আক্তারের স্ত্রী ও তনুসহ সব হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের গ্রেপ্তার করুক পুলিশ।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তনু হত্যা মামলার তদন্তসহায়ক দলের একজন বলেন, ‘ঈদের ছুটির কারণে জিজ্ঞাসাবাদ বন্ধ রয়েছে। ঢাকায় একাধিক বৈঠক হয়েছে। ঈদের ছুটির পর মামলার গতি আরও বাড়বে। ঢাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিআইডি এ মামলার কিনারা করতে চায়।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ‘তনুর পরিবার একেক সময়ে একেক রকম তথ্য দিচ্ছে। মিডিয়ার সামনে কথা বলছে। আমরা তদন্ত করছি। আসামি শনাক্ত হয়নি, আমরা কিসের ওপর অভিযোগপত্র দেব? আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।’
কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরের কালভার্টের কাছের ঝোপ থেকে ২০ মার্চ উদ্ধার করা হয় তনুর লাশ। এ ঘটনায় ২১ মার্চ তাঁর বাবা কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ১ এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
0 facebook: