06 November 2015

টাউনহলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রেস কনফারেন্স


কুমিল্লা রিপোর্ট২৪ ডেস্কঃ বিপিএল এর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স’ বিশ্বমঞ্চে কুমিল্লাকে আলোকিত করবে উল্লেখ করে দলটির প্রধান উপদেষ্টা ও পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) বলেছেন, ইতোমধ্যে কুমিল্লার নাম ক্রিকেট বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে। কুমিল্লাকে চিনতে শুরু করেছে বিশ্ববাসী। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বিশ্ব মানচিত্রে কুমিল্লাকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাবে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার টাউন হল মিলনায়তনে কুমিল্লা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হাত ধরে বাংলাদেশের পাশাপাশি কুমিল্লার ক্রিকেটও অনেক দূর এগিয়ে যাবে- এ ব্যাপারে দলমত নির্বিশেষে সকলের সহায়তা কামনা করে লোটাস কামাল বলেন, আমি ক্রিকেট ভালোবাসি। ৩০ বছর যাবৎ ক্রিকেটের সাথে সংশ্লিষ্ট। কুমিল্লার মানুষের দোয়া, ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণায় এই ক্রিকেট থেকে আমি অনেক সম্মান পেয়েছি। কুমিল্লার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে একটি আর্ন্তজাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে কুমিল্লায় যে স্টেডিয়াম রয়েছে সেটিকে সংস্কার করা ছাড়াও নতুন একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। আপনারা স্টেডিয়ামের জন্য পছন্দ মতো জায়গা খুঁজেন। বাকি যা কিছু লাগে আমি দেখবো।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বার্তা সবার কাছে পৌছে দিতে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মধ্যে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: হাসানুজ্জামান কল্লোল । এসময় কুমিল্লার বিভিন্নস্তরের বিশিষ্টব্যক্তিবর্গ, শতাধিক সাংবাদিক এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, বিপিএলে ‘কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স’ খেলছে এটা কুমিল্লাবাসীর জন্য গর্বের বিষয়। আমি ‘কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স’ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী লোটাস কামালের সাথে আছি। আমরা এক সাথে কাজ করলে কুমিল্লাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
তিনি বলেন, কুমিল্লাকে বিভাগ করার জন্য জাতীয় সংসদে দাবি জানিয়েছি। বিভাগ নিয়ে যত ষড়যন্ত্র হোক না কেন আমরা তা মোকাবেলা করে কুমিল্লাকে বিভাগ করবো ইনশাল্লাহ।
প্রেস কনফারেন্সে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রতি মানুষের ভালোবাসার কথা জানাতে গিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, দল গঠনের পর থেকে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ও এর বাইরের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন পেয়েছি। সুদূর লন্ডন থেকে সাবেক বিশ্বসেরা ক্রিকেট তারকারা ফোন করে স্বাগত জানিয়েছেন। সহযোগিতার প্রয়োজন হলে চাইতে বলেছেন। তাদের এ ভালোবাসা ও আগ্রহ প্রমাণ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হাত ধরে বিশ্বপ্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে কুমিল্লার নাম। ক্রমেই বিশ্বমঞ্চে আলোকিত হবে কুমিল্লা।
আ.হ.ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, কুমিল্লা শহরকে নিয়ে আমরার একটা স্বপ্ন আছে, সেটা হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা, প্রত্যেকটা সড়ক প্রশস্ত করা। কুমিল্লাকে একটি আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার প্রত্যেকটি কাজ করে যাবো।
তিনি বলেন, কুমিল্লা টাউন হলকে বৃহৎ আকারে দর্শনীয় একটি টাউন হলে পরিণত করবো। প্রত্যেকটা শহরের ঐতিহ্য থাকে। কুমিল্লা শিক্ষা সাহিত্য সংস্কৃতিতে অগ্রগামী। কুমিল্লার ঐতিহ্য আমরা। কুমিল্লার সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে এমন টাউন হল করবো যাতে কুমিল্লায় কেউ এলেই বুঝতে পারে এটা টাউন হল। মনের মাধুরী মিশিয়ে আমরা একটি টাউন হল নির্মাণ করবো।
আ.হ.ম মুস্তফা কামাল বলেন, কুমিল্লা স্টেয়িামকে আধুনিকায়ন করতে যা যা লাগে তা আমি করবো। আন্তর্জাতিক মানের করতে পারলে এখানেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ করতে পারবো। কিন্তু হোটেল না থাকায় কুমিল্লায় ম্যাচ করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, কুমিল্লার মানুষ ক্রিকেটকে ভালোবাসে বলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স মিডিয়া জগতে ৭৫ ভাগ স্থান করে আছে।
তিনি বলেন, দলমত নির্বিশেষে, আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতের উর্ধ্বে উঠে আমরা ক্রিকেটকে ভালোবাসবো। ক্রিকেটের জয়গান করবো এবং ক্রিকেটের জয়গানের মধ্য দিয়ে দেশকে ভালোবাসবো। দেশের প্রতি মমত্ববোধকে আরো বিকশিত করবো। আরো উচ্চতায় নিয়ে যাবো সেটাই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।
তিনি বলেন, দলমত নির্বিশেষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আমাদের গৌরব, আমাদের অহংকার, আমাদের চেতনা, আমাদের ঐতিহ্য, সকল কিছুর মূলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
লোটাস কামাল বলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কুমিল্লাবাসীর কাছে রেখে গেলাম, এটা কুমিল্লাবাসীর আমানত, এটা কুমিল্লার ঐতিহ্য।
মিডিয়ার সমর্থনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি বাংলাদেশের মিডিয়াও সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। ইতোমধ্যে মিডিয়ার ৭৫ শতাংশ সমর্থনই তৈরি হয়েছে ভিক্টোরিয়ান্সের পক্ষে। অনুষ্ঠানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কুমিল্লার সমন্বয়ক ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার, কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি কামরুল ইসলাম শাহিন এবং লোটাস কামাল গ্রুপের অরবিটালস এন্টারপ্রাইজের জিএম ইব্রাহিম খলিল মজুমদারকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থাপনা করেন দৈনিক কুমিল্লার কাগজের সম্পাদক আবুল কাশেম হৃদয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভিক্টোরিয়ান্সের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভিক্টোরিয়ান্সের সমর্থকদের স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখা, টিকেট প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদানে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কনসার্ট আয়োজনের মাধ্যমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পুরো দলকে কুমিল্লা এনে দর্শকদের ভালবাসা দিয়ে উজ্জীবিত করা হবে।

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: