মোঃ হাবিবুর রহমান খানঃ কুমিল্লা পুলিশ সুপার শাহ মোঃ আবিদ হোসেন যোগদানের পর কুমিল্লা জুড়ে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কুমিল্লার ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে অফিসারদের দিক নির্দেশনাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কাজ করার নির্দেশ দেন এসপি শাহ মোঃ আবিদ হোসেন। কুমিল্লার সুযোগ্য পুলিশ সুপার শাহ মোঃ আবিদন হোসেন যোগদানের পর কিছুদিন পুলিশের বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর বর্তমানে পুলিশ সুপারের অগোচরে চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের ধরছাড় বাণিজ্য। এ বাণিজ্যে পুলিশ সুপার কিছুই না জানলেও তবে বেশ কিছু উচ্চতর কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে বলেও জানা গেছে। ফলে তাদের সাপটের কারণে কুমিল্লায় প্রকাশ্যে চলছে ধরছাড় বাণিজ্য। কুমিল্লা ছত্রখিল, চকবাজার ফাঁড়ি, কোতয়ালী এলাকা, ক্যান্টনমেন্ট এলাকাসহ কোতয়ালী এলাকায় পুনরায় শুরু হয়েছে বাণিজ্য। সাধারণ মানুষকে ধরে হয়রানি করা হচ্ছে। গত ২ নভেম্বর ২০১৫ইং তারিখ সীমান্তবর্তী এলাকার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী সানু মিয়াসহ ২ জনকে আটক করার পর ৩৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ১ জনকে ছেড়ে দিলেও সানু মিয়াকে সন্দেহজনকভাবে চালান করেন। এ বিষয়ে এসআই সফিককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি উল্টো প্রতিবেদকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্লীল ও উচ্চসরে ধমক ও হুমকি দেয়। চকবাজার জুয়ার বোর্ডের টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার গত ৫ নভেম্বর রাত ১১টায় জুয়ার বোর্ডে গিয়ে তাদেরকে টাকার জন্য হুমকি এসআই সফিক। জুয়ার বোর্ড চলুন বা না চলুক এটা তার বিষয় নয়। প্রতিদিনের টাকা চকবাজার ফাঁড়িতে দিয়ে আসতে বলা হয়। এছাড়াও ফাঁড়ির সত্যজিদ, মিলন, অর্জুন, বাবু, মিরু, আসাদ সিভিল পোশাকে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদেরকে গ্রেফতার ও মারধরের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে। ফাঁড়ির আনার পর সন্দেহ বা কঠিন ধারা দেখিয়ে টাকা আদায় করে। প্রতিদিন বিকাল ৪টার দিকে ব্রীজের উত্তর পাড় গোলাবাড়ি, শাহপুর নিশ্চিন্তপুর, বিবির বাজার এসব এলাকায় গিয়ে সাদা পোশাকের পুলিশ ধরছাড় বাণিজ্যে লিপ্ত থাকে। এএ ঘটনায় পুলিশের নিরাপত্তা নিয়েও ঝুকিতে আছে। ইতিপূর্বে মাদক ব্যবসায়ীর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। তবে নতুন পুলিশ সুপার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর কিছুদিন বন্ধ করার পর নতুন আইসি সফি যোগদানের পর পুনরায় গ্রেফতার বাণিজ্যে নেমে পড়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হওয়ার মালামাল আসাদ গর্জনখোলার মাদক সম্রাট রসনির নিকট বিক্রি করছে বলেও জানা গেছে। গত ৫ নভেম্বর ২০১৫ইং তারিখে সোনালী হোটেল আতিক ও তার স্ত্রীকে আটক করার ৩ ঘন্টা পর ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছেন কোতয়ালী মডেল থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন। তবে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন। ৫ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যায় ধর্মপুর এলাকা থেকে এক মাদক ব্যবসায়ী ও ২ চালকের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা আদায় করেন এসআই আরিফুল ইসলাম ও এসআই টিপু রায়।
এদিকে কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মো: মজনু মিয়া গতকাল রাতে সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়াস্থ মনির হোটেল হতে ব্যাবসায়ী মো: আবুল কাশেম ভূইয়াকে অবৈধ ভাবে আটক করে নগদ টাকা, মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে প্রকাশ, গত ৬ নভেম্বর রাত ৮টায় ব্যাবসায়ী সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়াস্থ মনির হোটেল হতে নাস্তা করা অবস্থায় ব্যাবসায়ী মো: আবুল কাশেম ভূইয়াকে ডেকে রাস্তায় নিয়ে আসে এবং হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে কোর্টে চালান দেয়ার ভীতি প্রর্দশন করে। কাশেমের দেহ তল্লাশী করে ১টি স্যামসাং মোবাইল সেট মূল্য আনুমানিক ১৭ হাজার ৫ শত টাকা, মানিব্যাগে রক্ষিত ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তার বাড়ীতে খবর দিয়ে আরো ৩০ হাজার টাকা আদায় করে। তবে অন্য একটি মাধ্যমে জানা যায়- তিনি ১৭ হাজার টাকা নিয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদর দক্ষিণ থানা এলাকায় কোতয়ালী থানার পুলিশ কিভারে অভিযান চালায় ? নিয়মানুযায়ী যেকোন থানা এলাকায় কোন অভিযান চালালে অন্য থানার পুলিশ ঐ থানার পুলিশ সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। এ ব্যাপারে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে এসআই মজনু মোবাইল ফোনে বলেন-বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ মোঃ আবিদ হোসেনের সাথে যোগাযাগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
0 facebook: