মহিউদ্দিন মোল্লা: কুমিল্লা মহানগরীর অর্ধ লক্ষাধিক
তরুণ এখন মাদকের নেশার কবলে পড়ে ধুঁকছে।
নেশার টাকা যোগাতে তারা চুরি-ছিনতাইয়ের মতো
নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সূত্রমতে,
নগরীতে ৫ লক্ষাধিক জনসংখ্যা রয়েছে। তার
মধ্যে লক্ষাধিক তরুণ। তাদের অর্ধেক নেশায় বুঁদ
হয়ে আছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন
সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে ভারত
থেকে সহজে মাদক প্রবেশ করছে। মাদক
ব্যবসা নিয়ে এখানে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা
ঘটেছে। ১৬ অগাস্ট নগরীর শুভপুর এলাকায় মিজান
মিয়ার ছেলে নাজিম হোসেনের সাথে মাদক
ব্যবসা নিয়ে একই এলাকার মমিন মিয়ার ছেলে
আনোয়ার হোসেনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এসময় ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিশু হৃদয়ের
পেটে ও হাতে গুলি বিদ্ধ হয়। মামলার প্রধান আসামি
নাজিম এখনও গ্রেফতার হয়নি।
সূত্র আরো জানায়, মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে
কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কিছু
কর্মকর্তার ভালো সম্পর্কের কারণে এখানে
মাদকের আগ্রাসন বাড়ছে। এদিকে এখানে
ফেন্সিডিল ও ইয়াবা বেশি বিক্রি হচ্ছে। তার মধ্যে
ফেন্সিডিলকে ‘ইঞ্চি’ ও ইয়াবাকে ‘বাবা’ বলা হয়।
ধনীর ছেলেরা ইয়াবা এবং নিম্নবিত্তের ছেলেরা
ফেন্সিডিল পান করে। বর্তমানে প্রতিটি ফেন্সিডিল
সাড়ে ৫শ‘ টাকা এবং প্রতিটি ইয়াবা ট্যাবলেট ১২০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে, কারো কারো প্রতিদিন ৭/৮টি
ট্যাবলেট লাগে। চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ
কুমিল্লার সভাপতি ডা. গোলাম মহীউদ্দিন দীপু
বলেন, কৈশোর থেকে যৌবনের প্রবেশের
সময়ে ছেলে-মেয়েরা নতুনের প্রতি বেশি
আগ্রহী হয়। এ সময়টা যেনো তার মাদকে
আসক্ত না হয় সেদিকে অভিভাবকদের নজর দিতে
হবে।
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র আদর এর চেয়ারম্যান
রেজাউল করিম সেলিম বলেন, সীমান্তবর্তী
জেলা হওয়ায় সহজে কুমিল্লা মহানগরীতে মাদক
প্রবেশ করছে। এখানে অর্ধ লক্ষাধিক তরুণ
মাদকের নেশায় আসক্ত। তাদের বিষয়ে ঘরে
অভিভাবক এবং বাইরে প্রশাসনের নজরদারী
প্রয়োজন।
কুমিল্লা সিটি কর্পোারেশনের প্যানেল মেয়র
হারুনুর রশিদ বলেন, মাদকের কুফলের বিষয়ে
ব্যক্তিগত ভাবে প্রচারণা চালিয়ে আসছি। জানাজা, সালিশ
যেখানে যাই সেখানে মাদকের বিষয়ে সচেতন
করছি। মাদক সিটি এলাকায় প্রবেশের বিষয়ে
প্রশাসনের সাথে নগরবাসীকেও সচেতন হতে
হবে।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আবদুর রব
বলেন, আমি এ থানায় নতুন যোগদান করেছি।
এখানে কমিউনিটি পুলিশিং-এর মাধ্যমে নগরবাসীকে
মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে
বলে জেনেছি। মাদকের প্রবেশ ঠেকাতে
আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকবো।
12 September 2015
Author: নতুন প্রজন্ম কুমিল্লা
কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।
আরো দেখুনঃ
- Blog Comments
- Facebook Comments