বাংলাদেশের এক প্রান্তের সীমান্ত জেলা কুমিল্লা। এখানকার জীবন নদী, অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও আকর্ষণীয় প্রত্নসম্পদের নিদর্শনে গড়ে উঠেছে এক ভিন্ন মাত্রার পরিবেশ। এখানকার জলবায়ু প্রায় চরম ভাবাপন্ন। শিল্পরসিকদের মতে, কুমিল্লা প্রাচীন স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক অঞ্চল। এখানে প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি ঐতিহাসিক ঘটনারও সাক্ষী রয়েছে।
প্রাচীন নিদর্শনাদী ও প্রত্নসম্পদে সমৃদ্ধ কুমিল্লা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে লালমাই পাহাড় অবস্থিত। এখানে ছিল সমৃদ্ধ সভ্যতা। এখানে রয়েছে শালবন বিহার, কুটিলা মুড়া, সতের রত্নমুড়া, রানীর বাংলার পাহাড়, আনন্দ রাজার প্রাসাদ, ভোজন রাজার প্রাসাদ, চন্ডীমুড়া তীর্থস্থান, ধর্মসাগর, ওয়ার সিমেট্রি, কেন্দ্রীয় মন্দির, রানী ডিক্টোরিয়া কলেজ, গোমতি নদী, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শাহসুজা মসজিদ, আইনুদ্দীন শাহর মাজার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ভ্রমণপিপাসু লোকদের আনন্দের জন্য নিম্নে কয়েকটি সৌন্দর্যের উল্লেখ করা হলোঃ
**শালবন বিহার ও প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর,কোটবাড়ী,কুমিল্লাঃ
**শালবন বিহার ও প্রত্নতাত্ত্বিক যাদুঘর,কোটবাড়ী,কুমিল্লাঃ
শালবন বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতি প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনাগুলোর একটি এই বৌদ্ধ বিহার । কুমিল্লার ময়নামতিতে খননকৃত সব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে শালবন বিহার অন্যতম প্রধান। কোটবাড়িতে বার্ডেরকাছে লালমাই পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় এ বিহারটির অবস্থান। বিহারটির আশপাশে এক সময় শাল-গজারির ঘন বন ছিল বলে এ বিহারটির নামকরণ হয়েছিল শালবন বিহার। এর সন্নিহিত গ্রামটির নাম শালবনপুর। এখনো ছোট একটি বন আছে সেখানে। এ বিহারটি পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের মতো হলেও আকারে ছোট। কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৮ কিলোমিটার। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়।
**২য় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের সমাধিক্ষেত্র ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিঃ
কুমিল্লা শহরের ৭ বা ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট। টিলার নিচে উঁচুনিচু ভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত বিভিন্ন দেশের সৈনিকদের সমাধিক্ষেত্র সারি সারি সাজানো হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, মিয়ানমার, জাপান, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের ৭৩৭ জন সৈনিকের দেহ সারিবেঁধে সমাধিস্থ হয়েছে। প্রতিটি সারির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। ওয়ার সিমেট্রির চারপাশে বিভিন্ন গাছ ও ফুল গাছ দেখা যায়। ঘন সবুজ দূর্বা ঘাস ওয়ার সিমেট্রিকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। ওয়ার সিমেট্রিকে কুমিল্লার লোকেরা ইংরেজ কবরস্থান বলে থাকে। সবুজে ঘেরা বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ বেষ্টিত এই জায়গায় গেলে আনন্দিত মনকে অজানা বিষণ্যতার পরশ দিয়ে যাবে। নিবিড় এই সুন্দর পরিবেশে ভ্রমণ পিপাসুরা কিছু সময় কাটিয়ে দিতে পারেন নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে। কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৬কিলোমিটার। ইহা ক্যান্টমেন্ট এলাকায় অবস্থিত। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়।
**বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড):
বাংলাদেশের পল্লী এলাকার প্রকট দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে অধ্যক্ষ আখতার হামিদ খান এটি প্রতিষ্ঠা করেন। আখতার হামিদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তার জন্ম কুমিল্লা জেলায়। বিশাল আয়তন নিয়ে এই বার্ডটি অবস্থিত। অসংখ্য গাছগাছালি ও সুনিবিড় ছায়াঘেরা সবুজ পাতা। মূলত পল্লী মানুষের উন্নয়নের জন্য এই বার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। পল্লীর হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণের জন্য প্রত্যেক থানা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে বার্ড। এটি কুমিল্লার কোর্টবাড়ীতে অবস্থিত। এখানে দুর্লভ জাতীয় গাছও দেখতে পাওয়া যায়। কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৮ কিলোমিটার। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়।
কুমিল্লা শহরের ৭ বা ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট। টিলার নিচে উঁচুনিচু ভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত বিভিন্ন দেশের সৈনিকদের সমাধিক্ষেত্র সারি সারি সাজানো হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, মিয়ানমার, জাপান, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের ৭৩৭ জন সৈনিকের দেহ সারিবেঁধে সমাধিস্থ হয়েছে। প্রতিটি সারির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন ধরনের ফুল গাছ লাগানো হয়েছে। ওয়ার সিমেট্রির চারপাশে বিভিন্ন গাছ ও ফুল গাছ দেখা যায়। ঘন সবুজ দূর্বা ঘাস ওয়ার সিমেট্রিকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। ওয়ার সিমেট্রিকে কুমিল্লার লোকেরা ইংরেজ কবরস্থান বলে থাকে। সবুজে ঘেরা বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ বেষ্টিত এই জায়গায় গেলে আনন্দিত মনকে অজানা বিষণ্যতার পরশ দিয়ে যাবে। নিবিড় এই সুন্দর পরিবেশে ভ্রমণ পিপাসুরা কিছু সময় কাটিয়ে দিতে পারেন নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে। কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৬কিলোমিটার। ইহা ক্যান্টমেন্ট এলাকায় অবস্থিত। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়।
**বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড):
বাংলাদেশের পল্লী এলাকার প্রকট দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে অধ্যক্ষ আখতার হামিদ খান এটি প্রতিষ্ঠা করেন। আখতার হামিদ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তার জন্ম কুমিল্লা জেলায়। বিশাল আয়তন নিয়ে এই বার্ডটি অবস্থিত। অসংখ্য গাছগাছালি ও সুনিবিড় ছায়াঘেরা সবুজ পাতা। মূলত পল্লী মানুষের উন্নয়নের জন্য এই বার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। পল্লীর হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণের জন্য প্রত্যেক থানা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে বার্ড। এটি কুমিল্লার কোর্টবাড়ীতে অবস্থিত। এখানে দুর্লভ জাতীয় গাছও দেখতে পাওয়া যায়। কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৮ কিলোমিটার। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়।
**লালমাই পাহাড়ঃ
কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম দিকে লালমাই পাহাড় অবস্থিত। এই পাহাড়টি ছোট ছোট টিলা দ্বারা বেষ্টিত। প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল গাছ এবং বিশাল বিশাল পাহাড়ি গাছ দ্বারা বেষ্টিত। আয়তন ৩৩.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। এর উচ্চতা ২১ মিটার। আজ থেকে ২৫ কিংবা ২৬ হাজার বছর পূর্বে এটি তৈরি হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়। ময়নামতির লালমাই পাহাড়ের সুনিবিড় ছায়াঘেরা সবুজবেষ্টিত গাছগাছালি ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর যেকোনো ভ্রমণ পিপাসুর মনে দাগ কাটবে অনেক দিন।
**ধর্ম সাগর, ত্রিপুরার মহারাজার খননকৃত দিঘীঃ
কুমিল্লা শহরের ভেতরে রয়েছে ধর্মসাগর। এই ধর্মসাগরের উত্তর কোণে রয়েছে কুমিল্লার শিশুপার্ক। এই শিশুপার্কে বসে সাগরের দৃশ্য উপভোগ করা যায়, সবুজ শ্যামল ও বিশাল বড় গাছ নিয়ে এই শিশুপার্ক। এই শিশুপার্কে বসলে মন ভরে যায় ভালো লাগার পরশে। রাজা ধর্মপালের নামানুসারে এই দীঘির নাম হয়েছে ধর্মসাগর। এটি সুবিশাল আয়তকার দীঘি। প্রায় ২০০-২৫০ বছর আগে আনুমানিক ১৭৫০ অথবা ১৮০৮ খ্রিস্টাব্দে প্রজাহিতৈষী রাজা ছিলেন ধর্মপাল। তিনি ছিলেন পাল বংশের রাজা। বাংলায় তখন ছিল দুর্ভিক্ষ। রাজা দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের সাহায্যের জন্য এই দীঘিটি খনন করেন। এই অঞ্চলের মানুষের জলের কষ্ট নিবারণ করাই ছিল রাজার মূল উদ্দেশ্য। এই দীঘিটি কেবল স্থানীয় মানুষের জলকষ্ট নিবারণ করছে, তা নয়। আনন্দপ্রিয় মানুষের কাছে সৌন্দর্যম-িত এ অপরূপ নয়নাভিরাম এই বিশাল দীঘিটি দখলকারীদের গ্রাসে ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। এই দীঘিই ভ্রমণকারীদের মনকে ছুঁয়ে যায় মনোমুগ্ধকর কাল্পনিক এক ভালোলাগার পরশে।
**গোমতী নদীঃ
কুমিল্লা শহরের ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে ক্যান্টেনমেন্টের পূর্ব-উত্তরে রয়েছে গোমতি নদী। এই নদীতীরের বাঁধ কুমিল্লা শহর রক্ষা বাঁধ। গোমতিকে বলা হয় কুমিল্লার প্রাণ। বর্ষাকালে এই নদীটির দৃশ্য খুবই মনোমুগ্ধকর। বর্ষাকালেই দেখা যায় এর ভরা যৌবন। নদীর কলকল ঢেউয়ের শব্দ দূরের ঘরবাড়ি, জেলেদের সারি বেঁধে মাছ ধরা, সাদা গাঙচিল, নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা ইত্যাদি দৃশ্য যেকোনো ভ্রমণকারীকে কিছু সময়ের জন্য কবি করে তুলবে।
**লালমাই পাহাড় চূড়ার চণ্ডীমুড়াঃ
কুমিল্লায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে কয়েকটি তীর্থস্থান রয়েছে তার মধ্যে চণ্ডীমুড়া ঐতিহ্য অন্যতম। কুমিল্লার আঞ্চলিক ভাষায় অপেক্ষাকৃত ছোট পাহাড়কে মুড়া বলা হয়। পাহাড়ের গায়ে সিমেন্টের সিঁড়ি বেয়ে শীর্ষে উঠে মন্দির দেখার আনন্দই আলাদা। কুমিল্লা শহরের প্রায় ১৩ কিলোমিটার পশ্চিমে কুমিল্লা-চাঁদপুর-বরুড়া সড়কের সংযোগস্থলে দেড়'শ ফুট পাহাড়ের উপরে অবস্থিত চন্ডীমুড়া মন্দির। এটি কুমিল্লার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। চণ্ডীমুড়ায় ২টি মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত। দক্ষিণ পাশের মন্দিরটি চণ্ডী মন্দির ও উত্তর পাশের মন্দিরটির শিব মন্দির। মন্দির দুটো সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত। সপ্তম শতাব্দীর খড়গ বংশীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাজা দেবখড়গের রানী প্রভাবতী একটি হিন্দু মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেবী সর্বাণীর মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। রানী প্রভাবতী হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। চণ্ডীমুড়ার উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুটের উপরে। এর চূড়ায় অবস্থিত এই মন্দির।
**রুপসাগর পার্কঃ
এটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কতৃর্ক প্রতিষ্ঠিত একটি বিনোদন পার্ক। পার্কটিতে ক্যাফে রুপসাগর নামে একটি চমৎকার রেষ্টুরেন্ট রয়েছে এছাড়াও প্যাডেল বোট এর ব্যবস্হা আছে। পরিবেশটাও চমৎকার । এটা সবার জন্য উন্মুক্ত । কুমিল্লা ক্যান্টমেন্ট এরিয়ার নাজিরাবাজার সংলগ্ন ক্যান্টমেন্ট গেইটে কোন আর্মিকে জিজ্ঞাসা করলেই দেখিয়ে দিবে অথবা সিএমএইচ গেই্টের উল্টো গেইটটাই রুপসাগরপার্কের গেইট। তারপরও যদি অসুবিধা হয় তাহলে যেকোন আর্মি পার্সনকে জিজ্ঞাসা করুন অথবা স্হানীয় যে কাউকে জিজ্ঞাসা করুন দেখিয়ে দিবে।
কুমিল্লার প্রাচীন উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থানসমূহের মধ্যে রূপবান মুড়া অন্যতম। রূপবান মুড়া প্রত্নকেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত প্রত্নসম্পদগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর মনে করে রূপবান মুড়া ৮ম শতাব্দীরও আগে নির্মিত। খননের পর এখানে একটি বিহার, একটি মন্দির, একটি ক্ষুদ্র স্তূপ ও একটি বেদীর স্থাপত্য নিদর্শন উন্মোচিত হয়েছে। কোটবাড়িতে শালবন বিহার এলাকাতে অবস্হিত । যেকোন অটো বা সিএনজিকে বললেই নিয়ে যাবে ।
বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার ময়নামতী অঞ্চলে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক সৌধস্থল। এটি কুমিল্লা সদর উপজেলার কোটবাড়ি সড়কের ওপারে রূপবান মুড়ার উল্টোদিকে অবস্থিত। এই প্রত্নস্থান পাহাড়ের গায়ের তিনটি স্তরে বিদ্যমান। প্রাচীনকাল থেকেই এই স্থানটি ইট পোড়ানোর খনি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এজন্যই এর এরকম নামকরণ করা হয়েছে।
**কোটিলা মুড়াঃ
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এর ভীতর অবস্থিত এটি একটি ১২০০ বছর পুরনো প্রত্নত্ত্বাতিক নিদর্শন। স্থানীয়ভাবে প্রত্নস্থানটি কোটিলা মুড়া নামে পরিচিত। খননের ফলে এখানে পাশাপাশি নির্মিত প্রধান তিনটি বৌদ্ধ স্তূপের নিদর্শন আবিস্কৃত হয়েছে। এ স্তূপগুলি বৌদ্ধ ধর্মের ত্রি-রত্নের (বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘ) প্রতীক। খননে সাত-আট শতকের দু’টি পাথরের মূর্তি, প্রচুর অদগ্ধ সীলমোহর ও নিবেদন স্তূপ এবং শেষ আব্বাসীয় খলিফা মু’তাসিম বিল্লাহর (১২৮২ – ১২৫৮) একটি স্বর্ণ মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। ফলে স্থাপনাটি সাত শতক থেকে তের শতক পর্যন্ত কার্যকর ছিল বলা যায়।
**চারপত্র মুড়াঃ
চারপত্র মুড়া ময়নামতীর একটি প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনস্থল। এটি লালমাই শৈলশিরার উত্তরাংশে কুমিল্লা সেনানিবাসের প্রায় মধ্যস্থলে অবস্থিত।এখানে খননের ফলে এক ক্ষুদ্র হিন্দু পীঠস্থান বা মন্দিরের (৪৫.৭ মিক্ম১৬.৮ মি) অস্তিত্ব উদ্ঘাটিত হয়েছে। পরিকল্পনা, আকৃতি, স্থাপত্য ডিজাইন ও অলঙ্করণের দিক থেকে এ মন্দির অসাধারন।
**আরও যে সব জায়গা ঘুরে আসতে পারেনঃ
**স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নিদর্শন শাহসুজা মসজিদ, মোগলটুলী, কুমিল্লা (কুমিল্লা শহরে অবস্থিত)
**জগন্নাথ মন্দির, জগন্নাথপুর, পূর্ব বিবিরবাজার রোড, কুমিল্লা (কুমিল্লা শহরে হতে ৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত। কুমিল্লা শহর হতে রিক্সা অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়)
**কুমিল্লা শহরে অবস্থিত বৌদ্ধ বিহারের ধবংসাবশেষ, রূপবানমুড়া ও কুটিলামুড়া, বার্ড সংলগ্ন
(কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৮ কিলোমিটার। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়)
**জোড়কানন দীঘি, সুয়াগাজী, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা (কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৮কিলোমিটার। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়)
**জগন্নাথ দিঘী, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা, কুমিল্লা (কুমিল্লা শহর হতে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। কুমিল্লা শহর হতে বাস যোগে যাওয়া যায়)
**বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন,কুমিল্লা (কুমিল্লা শহরে কান্দিপাড় সংলগ্ন)
**শ্রী শ্রী রাম ঠাকুরের আশ্রম, রানীর বাজার, কুমিল্লা (কুমিল্লা শহরে রাণীর বাজার সংলগ্ন)
**রামমালা পাঠাগার ও নাট মন্দির (লাকসাম রোড কুমিল্লা)
**নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়ী, নবাব বাড়ী, চৌমুহানী, কুমিল্লা
**সংগীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মনের বাড়ী, চর্থা নবাববাড়ী, চৌমুহানী, কুমিল্লা
**পুরাতন অভয় আশ্রম (কেটিসিসিএ লিঃ), সদর উপজেলা সংলগ্ন
**বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ড, মুরাদনগর উপজেলা, কুমিল্লা
**কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী বেগম নার্গিসের বাড়ী, দৌলতপুর,মুরাদনগর, কুমিল্লা
**নবাব ফয়জুন্নেছার পৈত্রিক বাড়ী, পশ্চিম গাঁও, লাকসাম, কুমিল্লা
**গলফ ক্লাব (কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট)
যেভাবে যেতে হবেঃ
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত সড়ক পথের দূরত্ব মাত্র ২:৩০ মিনিটের। ঢাকা থেকে কুমিল্লা ৯৬ কিলোমিটারের পথ। ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে সরাসরি বাস যাতায়াত করে। ঢাকা থেকে প্রাইম, তিশা, এশিয়া লাইন ইত্যাদি বাসে আপনি সরাসরি যেতে পারেন। বাস ভাড়া জনপ্রতি ১১০ থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ফেনীর যে কোনো বাসে চড়েই পৌঁছাতে পারেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত।
বাস সার্ভিসের দিক থেকে তিশা এবং এশিয়া লাইন এগিয়ে। যেকোন একটিতে চড়েই যেতে পারেন কুমিল্লার পথে। যারা চট্টগ্রাম থেকে আসতে চান তাদের জন্য প্রীন্স সৌদিয়া ই ভালো হবে। তবে মজার ব্যাপার হলো চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা যেতে বাস এর তুলনায় ট্রেনে সময় কমই লাগে, মাত্র ৩:৩০ মিনিট। বাস এ সময় লাগে ৪:৩০ মিনিট এর মত।
কোথায় থাকবেনঃ
রাতযাপন করার মতো হোটেলের অভাব কুমিল্লায় নেই। উলেখযোগ্য কিছু হোটেল হচ্ছে আবেদীন, নূরজাহান, আশিক, মেরাজ, ময়নামতি ইত্যাদি। এছাড়াও কুমিলায় রয়েছে বেশকিছু ভালোমানের রিসোর্ট। বার্ডে যোগাযোগ করলে সেখানেও থাকতে পারেন।