01 July 2015

কুমিল্লা মেঘনার দু’টি সেতু পাল্টে দিয়েছে লাখো মানুষের জীবনযাত্রা


নিজস্ব প্রতিবেদক: দু’টি সেতু বদলে দিবে কয়েক লাখ মানুষের জীবনযাত্রা। আলোকিত করে তুলবে হোমনা, মেঘনা, তিতাস, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাত শতাধিক গ্রাম। বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায়। 

সবমিলে স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিয়েছে নদীবেষ্টিতে মেঘনা উপজেলা কাঁঠালিয়া ও পারারবন্দ নদীর উপর নবনির্মিত সেতু দু’টি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বৃহৎ জনগোষ্ঠীর চাহিদার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে শুরু হওয়া সেতু দু’টি নির্মান কাজে বাস্তাবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। 

মেঘনা উপজেলা বলতে নদীবেষ্টিত ১০৪টি গ্রামকেই বুঝাতো। কৃষিনির্ভর লাখো জনগোষ্ঠীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌপথ। প্রায় ১৭ বছর আগে দাউদকান্দি উপজেলা থেকে ৪টি ও হোমনা উপজেলা থেকে ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয় মেঘনা উপজেলা। পরবর্তীতে ভাওখোলা ইউনিয়কে ভেঙ্গে দুইটি ইউনিয়নে রূপান্তরিত করা হয়। যা বর্তমানে ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে মেঘনা উপজেলা গঠিত। 

মেঘনা উপজেলার লোকজনকে প্রয়োজনীয় কাজে কুমিল্লা সদরে বা রাজধানী ঢাকাতে যেতে হলে নৌপথে ইঞ্জিন নৌকা বা ট্রলারের সাহয্যেই যাতায়াত করতে হতো। নৌপথের যাতায়াতে ব্যবহার হতো কাঁঠালিয়া ও পারারবন্দ নদী। এ দু’টি নদী মেঘনা উপজেলাকে সবদিকে থেকে পৃথক করে রেখেছিল। 

উপজেলা গঠনের পর ওই জনপদের মানুষের আশা ছিল কাঁঠালিয়া পারারবন্দ নদীর উপর একদিন সেতু নির্মান হবে। অবশেষ ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার মধ্য দিয়ে সেই আশা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। 

মেঘনা উপজেলার প্রায় একলাখ মানুষের আশায় বুক বেঁধে থাকা বহুদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের পথ ধরে হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাঞ্ছারামপুরের কয়েক লাখ মানুষে জীবনযাত্র বদলে দিচ্ছে হোমনা-মানিকারচর-মেঘনা সড়কে কাঁঠালিয়া নদীর উপর ২৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪১৮ মিটার দীর্ঘ একটি এবং একই উপজেলার হোমনা-মানিকারচর-মেঘনা সড়কে পারারবন্দ নদীর উপর ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩০৪ মিটার দীর্ঘ আরেকটি সেতু। 

সেতু দু’টি নির্মান হওয়ায় মেঘনা উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুরের অন্তত আট লাখধিক লোকের দীর্ঘদিনের যাতায়াত দুর্ভোগ দূর হয়ে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। 

কৃষিনির্ভর ওই সব উপজেলাগুলো উৎপাদিত কৃষিজাত পন্য। বিভিন্ন স্থানে সহজে বাজারজাতের সুযোগ সৃষ্টির মধ্যদিয়ে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। 

কেবল তাই নয়, চরাঞ্চলের মানুষগুলো উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য সহজে যেতে পারবে কুমিল্লা অথবা ঢাকায়। এছাড়াও নবনির্মিত ওই দু’টি সেতুকে ঘিরে ওইসব উপজেলার শিক্ষা ও সাস্কৃতিক কর্মকান্ডের জায়গাটিও হয়ে উঠবে সমৃদ্ধ।

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।