05 June 2015

ফজলুল হালিম চৌধুরী


ফজলুল হালিম চৌধুরী (জন্ম: ১ আগস্ট, ১৯৩০ মৃত্যু: ৯ এপ্রিল, ১৯৯৬) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমীর একজন ফেলোতিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৫১ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেনতিনি ১৯৫৬ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন
তিনি ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন১৯৫৬ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীত হন১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রীডার হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৬৩ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হনতিনি ১৯৬৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন১৯৭২ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডীন নির্বাচিত হনতিনি ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেনএছাড়া তিনি বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৫১ সালে রসায়ন বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেনতাঁর স্নাতকোত্তর থিসিসের বিষয় জুটের বিভিন্ন অংশের রাসায়নিক বিশ্লেষণ এবং তার ব্যবহারবাংলাদেশের কৃতী বিজ্ঞানী আবুল হুস্সাম আমাকে বলেছিলেন, তিনি ঢাবির রসায়ন বিভাগের ছাত্র থাকাকালে পুনরায় ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখেছিলেন যে এই গবেষণাটি জুটের ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে১৯৫৩ সালে রয়্যাল কমিশন ফর এক্সবিশন স্কলারশিপ নিয়ে ১৯৫৬ সালে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Patuch Prize লাভ করেন ভারতীয় ও পাকিস্তানি ছাত্রদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ থিসিস প্রদান করার জন্যকিন্তু ১৯৫৮ সালে তাঁর চেয়ে কম যোগ্যতার একজন শিক্ষককে রিডার মনোনীত করায় তিনি ঢাবির রসায়ন বিভাগ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে যোগ দেনকিন্তু লক্ষণীয় যে পরবর্তী সময়ে উপাচার্য হয়ে ঢাবির রসায়ন বিভাগের তাঁর শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক মোকারম হোসেন খোন্দকারের নামে মোকারম বিজ্ঞান ভবন (১৯৮২-৮৩) নির্মাণ করেন
৯৬৭ সালে রাবিতে ফলিত রসায়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেনতিনি নবাব আবদুল লতিফ হলের প্রথম প্রভোস্ট এবং ১৯৭২ সালে রাবিতে ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেনতিনি ছাত্র-শিক্ষকদের সার্বিক কল্যাণে সব সময় সক্রিয় ছিলেন১৯৫৭-৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৫৮-৫৯ সালে রাবির শিক্ষক ক্লাবের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন১৯৭০-৭২ সালে রাবির শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন

তিনি ১৯৭৩ সালে ইউকে চলে যান১৯৭৪-এ বঙ্গবন্ধু তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে বিজ্ঞানবিষয়ক সদস্য নির্বাচিত করেন১৯৭৬ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেটে জয়ী হয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন১৯৭৬-৮৩ সালে সামরিক স্বৈরাচারী সরকারের উত্থানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে থাকে, কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে বিঘ্নিত করতে পারে, তা সমর্থন করেননিতাঁর সময় সামরিক স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আন্দোলন, বিক্ষোভ, হরতাল, পে-কমিশন প্রদত্ত বেতন স্কেল প্রান্তিক সুবিধাদি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলেছেএর পরও তিনি ধৈর্য হারাননি এক মুহূর্তের জন্যকিন্তু ১৯৮৩ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যখন মজিদ খান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন উত্তাল হয়, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিরুদ্ধে তৎকালীন স্বৈরাচারী শাসনে এক চরম নজিরবিহীন পুলিশি অ্যাকশনের প্রতিবাদে ১৯৮৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেনতিনি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরাচারী হস্তক্ষেপ বরদাশত করেননিএরপর তিনি বিজ্ঞান উপদেষ্টা হিসেবে ১৯৮৫-৯১ সালে ইউনেসকো দিল্লিতে কর্মরত ছিলেনজীবনসায়াহ্নে ১৯৯৬ সালের প্রথমার্ধে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বাবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা প্রসারে বক্তব্য দেনএই অনুষ্ঠানটি ছিল মৃত্যুর আগে তাঁর শেষ প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।