নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুমিল্লা গোমতী নদীর চর আর লালমাই পাহাড়ের মাটি নির্বিচারে কেটে নেয়া হচ্ছে । ইট ভাটায় যাচ্ছে নদীর চর আর পাহাড়ের মাটি। ট্রাক্টর দিয়ে মাটি আনা নেওয়ার কারণে নদীর দু’পাড় প্রায় ধ্বংসের পথে। অন্যদিকে লালমাই পাহাড়ের মাটি কেটে নেওয়ার কারণে ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি। প্রভাবশালীদের লোভের কারণে বিপন্ন প্রায় লালমাই পাহাড়। সরজমিনে কুমিল্লার গোমতীর নদীর পাড়ে ঘুরে দেখা যায় মাটি কাটার কোদাল হাতে অর্ধশতাধিক শ্রমিক নদীর চর আর লালমাই পাহাড়ে নির্বিচারে মাটি কাটার উৎসবে মেতে আছে। কোন কোন জায়গা থেকে কিভাবে মাটি কাটতে হবে সেই নির্দেশনা ও পাহারা দিচ্ছিল কিছু লোক। গোমতী নদীর প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকায় “োরসে কাটা হচ্ছে চরের মাটি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সদর উপজেলার টিক্কারচর,জালুয়াপাড়া,চাঁনপুর ব্রীজ,রতœবতী,বানাশুয়া,ছত্রখীল,পালপাড়া,বুড়িচং উপজেলার বালিখাড়া,সিমাইলখাড়া,ভান্তিসহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকা।। এছ্ড়াও দেবিদ্বার উপজেলার কোম্পানীগঞ্জসহ আরো বেশ কয়েকটি স্থানে চরের মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি বহন করার ট্রাক্টর যাওয়া আসার কারণে ধুলোবালির ঝড় তৈরি হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে গোমতী সংলগ্ন প্রায় ১০ হাজারের বেশী বাসগৃহের। চরের বেশীরভাগ মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়। এদিকে নির্বিচারে লালমাই পাহাড়ের মাটি কেটে নেওয়ার ফলে হূমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে খবর প্রকাশ হলেও নির্বিকার জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। পাহাড়ে মাটি কাটার কাজটি প্রভাবশালীদের তাই স্থানীয় নিরীহ জনগণ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে না। তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে লালমাই বিজয়পুর এলাকার সালমানপুর কোটবাড়ী এলাকার লোক জানান, প্রশাসন এ বিষয়ে জানলেও তারা পাহাড় রক্ষার জন্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গত কয়েক বছরে লোক দেখানো দু’একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। স্থানীয়রা আরো জানান,যে হারে পাহাড় কাটা হচ্ছে তাতে করে আগামী দু’এক বছর পর লালমাই এলাকায় কোন পাহাড় ছিল তা শুধু ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাবে।
বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা পরিবেশ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক সামছুল হকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, লালমাই পাহাড়ে মাটি কাটার বিষয়টি সঠিক নয়। কারণ আমাদের লোকজন নিয়মিত টহল দেয়। তিনি আরো জানান,আগে যে দু’টি পাহাড়ে মাটি কাটা হয়েছিল তার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
পাহাড় ও নদীর চর থেকে নির্বিচারে মাটি কাটার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কি পদক্ষেপ নিবে এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: হাসানুজ্জামান কল্লোলের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার কাজী তামজিদ ও ফিরোজ আল মামুন জানান, অবৈধভাবে যারা নদীর চর ও লালমাই পাহাড়ের মাটি কাটছে তাদের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অভিযানের অংশ হিসেবে গতকালও গোমতী নদীর ছত্রখিল এলাকা থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে একটি ট্রাক্ট্রর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
0 facebook: