হত্যার শিকার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেছেন, ‘মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তার ওপর আমি সন্তুষ্ট নই। তদন্ত কর্মকর্তা আমাদের কথা শোনেন না। কয়েক দিন আগে যোগাযোগ করেছেন। সে সময় আমাদের চুপ থাকার জন্য বলেছেন। তাঁরা নাকি চেষ্টা করছেন।’
সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। এই এক বছরে মামলা তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট, তা জানতে চাইলে নিহত তনুর মা আনোয়ারা বেগম আজ রোববার প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত এক বছরে আমার ডায়াবেটিস হয়েছে। আগে এ রোগ ছিল না। মায়ের কষ্ট মেয়ে বোঝে। ছেলেরা বোঝে না। আমি অসুস্থ, মেয়ে থাকলে বুঝত। সব কাজ করে দিত।’
মেয়ের স্মৃতিচারণা করে আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এত চালু মেয়ে (তনু) কেমনে মরল? কারা গরিবের পেডে (পেটে) লাথি মারছে। তনু হত্যার পর ছোট ছেলেটা কোথাও কাজের জন্য যেতে পারে না। আমাদের আগলে রাখে।’
সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের এক বছর পূর্ণ হলেও এ মামলার কোনো আসামি এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। দীর্ঘ সময়ে এ মামলার কোনো কিনারা করতে পারেনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ অবস্থায় তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে শঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে সোমবার বেলা ১১টায় তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেনের কাছে স্মারকলিপি দেবে গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লা। এ ছাড়া ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার দিনটি উপলক্ষে কলেজে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে।
এই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ আজ রোববার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শীতকালীন মহড়ার কারণে নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়াতে ধীরগতি ছিল। ঘটনাস্থলে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ আলামত ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেগুলো এখনো পেন্ডিং আছে। এগুলো পেলে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ পর্যন্ত এ মামলায় শতাধিক সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তনুর মায়ের অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা কাজ করছি। আজও ঢাকায় এ কাজে এসেছি।’
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেন, ‘মামলাটি বর্তমানে সিআইডি দেখছে। যত দিন আমরা দেখেছিলাম, তত দিন আপনাদের জানিয়েছি। এর বাইরে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।’
0 facebook: