কুমিল্লা রিপোর্ট২৪ ডেস্কঃ কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কারচর ব্রিজকে কেন্দ্র করে গোমতী নদীতে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। কারণ এই এলাকাটিতে অত্যান্ত মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে। আদর্শ সদর উপজেলার প্রয়াত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবদুর রউফের ইচ্ছা ছিল এই এলাকায় একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা। তিনি জীবিত থাকাকালীন সময়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় এই স্থানটিতে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য কয়েকবার দাবি জানিয়ে ছিলেন।সাম্প্রতিক সময়ে সরেজমিনে গিয়ে লক্ষ্য করেছি, শহরের মানুষ এখন একটু সময় পেলেই যানজট ও কোলাহলমুক্ত প্রকৃতির সৌন্দর্য ঘেরা এই গোমতীর পাড়ে ছুটে যায়। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসব ও ছুটির দিনগুলোতে গোমতির এই এলাকাতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
কুমিল্লা গোমতী নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এই এলাকাগুলোতে ছায়াছবি ও নাটকের শুটিং করার জন্য ছুটে এসেছেন বাংলাদেশের কয়েকজন নামকরা চলচ্চিত্র নিমার্তা। গোমতীর পাড়ে শুটিং হয়েছে স্বনামধণ্য পরিচালক রেদোয়ান রনির চলচ্চিত্র-‘চোরাবালি’, মোস্তফা সারওয়ার ফারুকীর নাটক -‘কেরাম’, ফয়সাল রাজীবের নাটক- ‘নন্দিনী আমি তোমারই রঞ্জন’, ‘মাধবী জাগলো বনে’, ‘জাগো’ চলচ্চিত্র সহ অসংখ্য নাটক। যেহেতু কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনেক দূর থেকে এসে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী এই স্থানটিতে নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, সুতরাং গোমতীর এই স্থানটিকে কেন্দ্র করে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলে দেশী-বিদেশী পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করা সম্ভব।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাংস্কৃতিককর্মী আনোয়ার হোসেন আলম বলেন-কুমিল্লার মাঝে একটি মনোমুগ্ধকর জায়গা হচ্ছে গোমতীর পাড়। গোমতী নদীতে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা বর্তমান সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ শহরের কোলাহলপূর্ন যান্ত্রিক জীবন থেকে একটু বিনোদন ও মনকে সতেজ করার জন্য সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ চায়। আদর্শ সদরের এই এলাকাটি অত্যান্ত মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে।
উল্লেখ্য গোমতী বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩২১ কিলোমিটার, তবে বাংলাদেশ অংশে গোমতী নদীর দৈর্ঘ্য ১৩৫ কিলোমিটার। নদীটি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের ডুমুর নামক স্থানে উৎপন্ন হয়ে পার্বত্যভূমির মধ্য দিয়ে সর্পিল পথ প্রায় ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করে কুমিল্লা সদর উপজেলার কটকবাজারের কাছে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কুমিল্লা সদরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর উপরে টিক্কারচর এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। যা টিক্কারচর ব্রিজ নামে নামকরণ করা হয়েছে। ব্রিজটি ২০১৩ সালে কুমিল্লা সদর আসনের সাংসদ হাজী আকম বাহাউদ্দিন বাহার উদ্ধোধন করেন। টিক্কারচর ব্রিজের দৈর্ঘ্য ২২৫ মিটার (৭৩৮ ফুট) এবং প্রস্থ ৫.৫মিটার(১৮ফুট)।এই বৃশালাকারের ব্রিজ নির্মাণের ফলে পাঁচথুবী ইউনিয়নের পাঁচ শতাদিক পরিবারে দু:খ লাঘব হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে টানা বৃষ্টির ফলে টিক্কার চর ব্রিজের উত্তর পাশে বিশাল গর্ত তৈরী হয়। তাৎক্ষনিকভাবে আদর্শ সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করেন।
0 facebook: