06 August 2016

মুরাদনগরে ৬ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা



কুমিল্লা রিপোর্ট২৪ ডেস্কঃ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ থেকে রামচন্দ্রপুর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার অংশ জুড়েই দগদগে ক্ষত! এই সংযোগ সড়কের বেশিরভাগ অংশের পিচ ওঠে গেছে অনেক আগেই। আর বৃষ্টি এলেই সড়কটিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।


স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ তিন বছর ধরে দুই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ সংযোগ সড়কটির বেহাল দশা হলেও সংস্কারের ব্যাপারে উদাসীন কর্তৃপক্ষ।



ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দূরত্ব বেশি হওয়ায় এবং ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সেখানকার বাসিন্দাদের হাট-বাজারসহ অন্যান্য কাজের জন্য মুরাদনগর উপজেলা সদরই একমাত্র ভরসা। দৈনন্দিন নানা কাজের জন্য মুরাদনগর সদরে আসতে হয় বাঞ্ছারামপুরবাসীদের। তবে এক্ষেত্রেও তাদের অনেকটা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।



সোমবার (১ আগস্ট) সরেজমিনে কোম্পানীগঞ্জ-রামচন্দ্রপুর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, ভারী যানবাহন চলাচল আর দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটির বেশিরভাগ অংশে পিচ ওঠে গিয়ে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। দেখলেই মনে হয় সড়কটির বুকজুড়ে দগদগে ক্ষত চিহ্ন! তবে এই ক্ষত সারানোরই যেন কেউ নেই!



দীর্ঘ তিন বছর ধরে কোম্পানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে রামচন্দ্রপুর বাজার পর্যন্ত এ সড়কটির করুণ অবস্থা। শুধু সংস্কারের অভাবে সড়কটিতে সৃষ্ট খানা-খন্দের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাঞ্ছারামপুর ও মুরাদনগর উপজেলার বাসিন্দাদের। এ নিয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।



কোম্পানীগঞ্জ-রামচন্দ্রপুর সড়কে চলাচালকারী সিএনজিচালক জহির মিয়া   বলেন, তিন বছর ধরে সড়কটির বেহাল দশা। সড়কজুড়ে সৃষ্ট খানা-খন্দ আর জলাবদ্ধতার কারণে গাড়ি চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। বেহাল সড়কের কারণে একদিকে যাত্রীদের যেমন কষ্ট হয় তেমনি গাড়িরও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়।
আরেক সিএনজি অটোরিকশা চালক আক্কাস মিয়া বলেন, বেহাল সড়কের কারণে গাড়ির অনেক ক্ষতি হয়। ২৫ মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লাগে এক ঘণ্টা। কোনো বিকল্প সড়ক না থাকায় এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতে অন্তঃসত্ত্বাসহ অন্যান্য রোগীদেরই বেশি কষ্ট হয়।



স্থানীয় কলেজছাত্রী আসমা বেগম   বলেন, প্রতিদিন এই বেহাল সড়ক দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। একবার ভাঙা এই সড়ক দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশা উল্টে গিয়ে আহত হয়েছিলাম। এরপরও প্রতিদিন এভাবেই আমাদের কলেজে আসা-যাওয়া করতে হয়।



রামচন্দ্রপুর বাজারের মুদি দোকানি কাউছার মিয়া   বলেন, সংস্কারের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি একেবারেই নাজেহাল। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের আগে কত প্রতিশ্রুতিই না দেন, অথচ ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর আমাদের দুর্ভোগের কথা আর চিন্তা করেন না।



শুধু সংস্কারে অভাবে দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ তিন বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাই দ্রুত এই সড়কটি সংস্কার করে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ হালিমুর রহমান   বলেন, কোম্পানীগঞ্জ-রামচন্দ্রপুর সড়কটি জেলা সড়ক প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। ইতোমধ্যেই সড়কটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার (দরপত্র) হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) আমি নিজেই সড়কটি দেখতে গিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি।



ঠিকাদার আমাকে বলেছেন, এখন বর্ষাকাল হওয়ায় কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে আসলেই কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি অচিরেই দুই উপজেলার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে।



সুত্রঃ জাগো নিউজ 

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: