30 January 2016

কুমিল্লা নগরীতে পথে পথে দুর্ভোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লা মহানগরীর বিভিন্ন প্রবেশপথ ও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জনগণের চলাচলের ক্ষেত্রে পথে পথে দুর্ভোগ লেগেই আছে। রাস্তাঘাট-ড্রেন ও ফুটপাত দখল করে যত্রতত্র দোকানপাট-টং, চায়ের স্টল, ফলের দোকান বসিয়ে চলাচলের রাস্তাগুলো সংকীর্ণ করে তোলা হয়েছে। অপরদিকে সিটি কর্পোরেশনের অধীনে রাস্তার পাশে নির্মিত বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নগরীর ‘বিষফোঁড়া’ হয়ে দেখা দিয়েছে।
এছাড়া সিটি কর্পোরেশন, বিভিন্ন পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালীদের নামে নগরীর বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকসহ ছোট-বড় পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়েরও অভিযোগ উঠেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অতিক্রম করে আঞ্চলিক সড়কের যাত্রীদের নগরে প্রবেশ ও বের হতে হয়। মহাসড়কের এপাশ থেকে ওপাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক পাড়ি দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে জেলার পদুয়ার বাজার, কোটবাড়ি রাস্তার মাথা (নন্দনপুর) ও আলেখারচর এলাকায় যাত্রীদের গাড়ি পরিবর্তন করতে হয়। ফলে পায়ে হেঁটে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক অতিক্রম করে গন্তব্যে যাওয়া-আসার সময় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়, শাসনগাছা, রাণীরবাজার, রাজগঞ্জ, ছাতিপট্টি, কাপড়িয়াপট্টি, তেরীপট্টি, চকবাজার, টমছমব্রিজ, রামঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যস্ততম রাস্তার দু’পাশে স্থানীয় প্রভাবশালী ছাড়াও রাজনৈতিক প্রভাবে রাস্তার জায়গা অবৈধভাবে দখল করে আধাপাকা ঘর ও টং দোকান নির্মাণ ছাড়াও ভাসমান দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এসব দোকানপাটের কারণে পথচারীদের স্বাভাবিক হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া নগরীর কান্দিরপাড়, চকবাজার, টমছম ব্রিজসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড থাকায় এসব গাড়ি কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকে। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন ছাড়াই ব্যাটারীচালিত ৫ সহস্রাধিক ইজিবাইক নগরীর বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। নগরীর স্টেশনরোড এলাকায় ভাঙ্গারি ও ওয়ার্কশপ দোকানগুলোর অধিকাংশ রাস্তা দখল করে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এতে নগরবাসী চরম দুর্ভোগের মধ্যেই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। এদিকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন জনগণের চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা না করে নগরীর অধিকাংশ সড়কে উন্নয়ন কার্যক্রম চালাচ্ছে।
এতে রাস্তাজুড়ে ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রীর কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী। এছাড়া দিনেরবেলায় ড্রেনেজের ময়লা পরিষ্কার করার কারণে রাস্তার উপর আবর্জনার স্তূপ ও গাড়ি দিয়ে ময়লা পরিবহনের কারণে যানজট আরও প্রকট হচ্ছে। অপরদিকে নগরীর কান্দিরপাড়ে টাউন হলের পাশে সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক কুমিল্লার নামে রেকর্ডভুক্ত সরু জায়গায় অবৈধভাবে বন্দোবস্ত/অনুমতি না নিয়ে এবং একাধিক উচ্ছেদ নোটিসের তোয়াক্কা না করে ৬ তলাবিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন (সিটি মার্কেট) নির্মাণ করেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন। এ মার্কেট শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান কান্দিরপাড়সহ আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি করছে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু জানান, কান্দিরপাড় টাউন হলের সামনের রাস্তার ভাসমান দোকান অপসারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শহরের রাস্তার পাশে অবৈধভাবে নির্মিত সকল দোকান অপসারণ করা হবে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের নামে শহরের টমছম ব্রিজসহ কয়েকটি স্থানে টোকেনের মাধ্যমে যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি জেনেছি, এ ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: