12 November 2015

কুমিল্লার কৃতি সন্তান অজিত কুমার গুহ


বিশেষ প্রতিবেদনঃ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও লেখক। জন্ম সুপারিবাগান, কুমিল্লা শহর, ১৫ এপ্রিল ১৯১৪ সাল। কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালা থেকে ১৯৩০ সালে ম্যাট্রিক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ১৯৩২ সালে আইএ ও ১৯৩৪ সালে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও ১৯৩৯ সালে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ। এরপর বিটি অধ্যয়ন ও প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। ১৯৪০-৪২ সালে শান্তিনিকেতনে বাস ও রবীন্দ্রসাহিত্যে বাস এবং রবীন্দ্রসাহিত্যে ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। ১৯৪২ সাল থেকে ঢাকার প্রিয়নাথ হাইস্কুলে প্রায় ছয় বছর শিক্ষকতা করেন। এরপর ১৯৪৮ সালে ঢাকা জগন্নাথ কলেজে বাংলা বিভাগে অধ্যাপনায় যোগদান করেন। সুবক্তা ও আদর্শ শিক্ষক হিসেবে তিনি যে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তার ফলে ১৯৫৭-৫৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তাকে খ-কালীন অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়। জগন্নাথ কলেজে বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধানরূপে ১৯৬৮ সালের ৩১ জুলাই অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের দায়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি গ্রেপ্তার হন। প্রায় দেড় বছর কারাভোগের পর মুক্তিলাভ করেন। ১৯৫৪ সালের ৩০ মে ৯২-ক ধারা জারি হলে আবার গ্রেপ্তার হন এবং এক বছর কারা নির্যাতন ভোগ করেন। অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতিচর্চার ধারা নির্মিতিতে তার অবদান ও সাফল্য অপরিসীম। রবীন্দ্রসাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে তিনি অসাধারণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। রবীন্দ্রসাহিত্য ও শিক্ষা, সংস্কৃতি বিষয়ক বহু প্রবন্ধ রচনা করেন। এসব রচনায় তার প্রজ্ঞা ও মননশীলতার পরিচয় মেলে।
মূল্যবান ভূমিকাসহ কয়েকটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেন। মেঘদূত, কৃষ্ণকান্তের উইল, গল্পগুচ্ছ, সোনার তরী ও গীতাঞ্জলি তার সম্পাদিত গ্রন্থ। মার্জিত ও পরিশীলিত রুচি, অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং আদর্শ শিক্ষক ও দেশপ্রেমে অঙ্গীকারবদ্ধ ব্যক্তি হিসেবে তিনি সমকালে অর্জন করেছিলেন অজস্র মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। ১৯৬৯ সালের ১২ নভেম্বর কুমিল্লার সুপারিবাগানে তার মৃত্যু হয়।


শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: