দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসমৃদ্ধ কুমিল্লার ঐতিহ্য ময়নামতি ও লালমাই পাহাড়ে রয়েছে চা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। এখানকার জলবায়ু, বৃষ্টিপাত, মাটি ও আবহাওয়া চা চাষের জন্য যথেষ্ট সহায়ক।
ময়নামতি ও লালমাই পাহাড়ে চা চাষ করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে বিগত সময়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল চা বোর্ডের কাছে লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ে চা চাষের এমনই সম্ভাবনার বিষয় তুলে ধরে বলে জানা গেছে। কিন্তু দীর্ঘ বছরেও এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের একটি সূত্র জানায়, দেশে চা চাষের অনুকূল এলাকায় চা বাগান তৈরির উদ্দেশ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য চা বোর্ড ১৯৯৮-’৯৯ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালায়। ওই সময় পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি জেলাসহ কুমিল্লার ময়নামতি ও লালমাই পাহাড়ে চা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে বিশেষজ্ঞ দল চা বোর্ডকে অবগত করে।
এছাড়া চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট, গবেষণা ইনস্টিটিউট ও চা বিজ্ঞানীরা চা বোর্ডকে এ পাহাড়ে চা চাষের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ময়নামতি ও লালমাই পাহাড়ের নিকটবর্তী ভারতের ত্রিপুরায় উন্নতমানের চা এর সফল চাষ হচ্ছে, তাই প্রাকৃতিক পরিবেশের সমতার কারণে কুমিল্লায়ও চা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ বছরেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
পরিবেশবিদ ও বিশিষ্টজনেরা বলছেন, গত কয়েক দশকে সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু চক্র ময়নামতি-লালমাই পাহাড় কেটে প্রকাশ্যে মাটি বিক্রির মাধ্যমে পাহাড়ের অবয়ব বিনষ্ট করে চলছে।
এছাড়া জাল, ভুয়া দলিল-খতিয়ান সৃজন করে যোগসাজশে ঐতিহ্যবাহী এ পাহাড়ী এলাকার অনেক ভূমি নিজেদের নামে-বেনামে কাগজপত্র করে নিয়েছে। ময়নামতি-লালমাই পাহাড়ে কর্তৃপক্ষ উন্নতমানের চা উত্পাদনের উদ্যোগ নিলে পাহাড়টি রক্ষাসহ অসংখ্য নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করছেন।