19 August 2015

কুমিল্লায় ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী পিকআপে চলাচল করছে যাত্রীরা

মহাসড়কের সিএনজি অটোরিক্সাসহ সকল প্রকার থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ করায় বিপাকে পড়েছে অল্প ও স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। সারা দেশের ন্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায়ও যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে যাতায়াতকারী ওই যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় অপেক্ষা করলেও আঞ্চলিকবাস গুলোতে তাদের ঠাঁই হয় না। প্রতিটি স্টেশন এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা বা ইজিবাইক শূন্যতায় শতশত যাত্রীদের অপেক্ষা ও দূর্ভোগ কমাতে বিকল্প যান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পণ্যবাহী পিকআপ ও ট্রাক। মহাসড়কের কুমিল্লার ময়নামতি সেনা নিবাস এলাকা থেকে শুরু করে নিমসার, চান্দিনা, মাধাইয়া, ইলিয়টগঞ্জ ও গৌরীপুরসহ প্রতিটি বাস স্টেশনের সিএনজি ষ্ট্যান্ডগুলোতে এখন পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। চান্দিনা বাস স্টেশন থেকে কুমিল্লামুখী ময়নামতি পর্যন্ত এবং ঢাকামুখী ইলিয়টগঞ্জ স্টেশনে ছেড়ে যাচ্ছে ওই পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক গুলো। আর শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পুরুষ যাত্রীরা ওই পিকআপ-ট্রাকে চড়ে যাতায়াত করছে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে। এদিকে ওই পিকআপ ভ্যান বা ট্রাকে পুরুষদের চড়া সম্ভব হলেও শিশু ও নারীদের চড়া খুবই কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্যবাহী ওই যানগুলোতে বসার কোন সিট না থাকায় কোন কোন চালকরা যাত্রীদের সুবিধার্থে অস্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন করলেও বেশির ভাগ যানে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করছে যাত্রীরা। যাত্রী সুফিয়া বেগম জানান, আমি কোরপাই মিলে চাকুরী করি। প্রতিদিন চান্দিনা থেইক্কা মিলে যাই। আগে সিএনজি দিয়া যাইতাম পাঁচ ট্যাহা লাগদো, এহন সিএনজি নাই ট্রাক কইরা যাই, দশ ট্যাহা নেয়। অপর যাত্রী স্কুল শিক্ষক ফাতেমা আক্তার জানান, আমি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমার বিদ্যালয়টি মহাসড়ক সংলগ্ন, চান্দিনা বাস স্টেশন থেকে দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। আগে সিএনজি যোগে যেতাম, এখন সিএনজি না থাকায় বিপাকে পড়েছি। আঞ্চলিক বাস গুলোও এতো কাছে আমাদের নিতে চায় না। আমাদের কি ট্রাকে চড়ে যাতায়াত সম্ভব? পিকআপ চালক মতিন জানান, আমরা দিনে ভাড়া মারি না। প্রতিদিন রাইতে মাছ লইয়া বিভিন্ন বাজারে যাই। রোডে সিএনজি না থাহনে যাত্রীরার দ্যাইখ্খা গাড়ি লইয়া আইছি। দিনে যাত্রী টানি আর রাইতে মাছ নেই। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমল বক্সী জানান, শিক্ষকসহ সকল যাত্রীদের পিকআপ ও ট্রাকে চড়ে যাতায়াতের বিষয়টি দু:খ জনক। শিক্ষক সমাজসহ সকল শ্রেণী পেশার যাত্রীরা নিরূপায় হয়ে ওইসব পণ্যবাহী যানে চড়তে বাধ্য হচ্ছেন। তবে সকল যাত্রীদের যথাযথ সম্মানের কথা চিন্তা করে বিকল্প পথ খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এদিকে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে সিএনজি অটোরিক্সা, ইজিবাইক বা থ্রি- হুইলার সহ সকল যান চলাচলে মহাসড়ক সংলগ্ন বিকল্প সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান যাত্রী ও চালকরা।

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।