26 March 2014

আমার দেখা জানা কুমিল্লা শহর ও উদার সহনশীল রাজনীতি

হাসান জাবির: আমাদের কুমিল্লা শহর পূর্বে ২ মাইল, পশ্চিমে ২ মাইল, উত্তরে ২ মাইল, দক্ষিনে ২ মাইল এ এর মাঝে ছিল সব। কুমিল্লা এয়ারপোর্ট, দেশের বৃহত্তম ইপিজেড , সদর হসপিটাল, ৫০০ শয্যা মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটাল, প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ ও হসপিটাল, প্রাইভেট হসপিটাল (প্রায় চল্লিশ /পঞ্চাস টা হবে, বিসিক ইন্ডাস্ট্রিজ এরিয়া, বিখ্যাত খদ্দর শিল্প, কুমিল্লার রসমলাই ( মাতৃ ভাণ্ডাড় ) ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ওমেন্স কলেজ, অজিত গুহ কলেজ, কুমিল্লা কলেজ, বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি সার্ভে ইন্সটিটিউট, জিলা স্কুল, হাই স্কুল, ইউসুফ স্কুল, ঈশ্বর পাঠশালা, ফয়জুন্নেসা স্কুল, মডার্ন স্কুল, আওয়ার লেডি ফাতেমা স্কুল, শৈল রানী স্কুল ও অনেক নামকরা স্কুল। নবাব বাড়ী, কুমিল্লা বোর্ড, সার্কিট হাউস, সিটি কর্পোরেশন নগর ভবন, কেন্দ্রীয় ঈদগা, প্রাচীন শাহ সুজা মসজিদ, টমটম ব্রিজ, ৫ টা সিনেমা হল, রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, ধান গবেষণা কেন্দ্র, বড় বড় পুকুর রানীর দীঘি, উজির দীঘি , নান্নুয়া দীঘি, ধর্ম সাগর, কুমিল্লা পার্ক, ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত স্টেডিয়াম, কুমিল্লা ক্লাব, ঐতিহাসিক টাউন হল, গোমতী নদী, এক সময় ব্যাংক পুকুর এর শহর, বড় বড় বিপনি বিতান বড় বড় অফিস,বড় বড় ইস্টার্ন ,সাত্তার,হক টাওয়ার প্লাজা বিল্ডিং , জজ কোর্ট , আদালত , নিউ মার্কেট ,রাজগঞ্জ , চক বাজার, রানীর বাজার ,বাদসা মিয়ার বাজার। পুলিশ লাইন, পাসপোর্ট অফিস। কেন্দ্রীয় কারাগার ,চিড়িয়াখানা, শিল্পকলা একাঢমী, নজরুল ইন্সটিটিউট কেন্দ্র, আমার কান্দিরপার পূবালী চত্বর আর কলেজ রোডের বিখ্যাত চায়ের দোকান বিনোদ বিহারী *( দাদার দোকান)। আমার দেখা শহরের রাজনীতি তে বড় নেতা নেত্রী - আহমেদ আলি স্যার, কুমিল্লার সিংহ অ্যাড আফজল খান, ওই সময় এর নবীন তরুন জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আকম বাহাউদ্দিন বাহার (এমপি ) সবার প্রিয় মুজিব ভাই (রেলমন্ত্রী ) বিএনপি এর মরহুম আকবর হোসেন (মন্ত্রী ) বেগম রাবেয়া চৌধুরী, পৌরসভা চেয়ারম্যান নিপাট ভদ্রলোক মরহুম কামাল উদ্দিন চৌধুরী ভিপি শাহ আলম আর সব পাটির মরহুম আউয়াল চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির এয়ার আহমেদ সেলিম চাচা উনাদের পরের শ্যমল দা, মিজানুর রহমান আজাদ ভাই, বাবলু ভাই, তানিম ভাই বিএনপি শাহ সেলিম ভাই, মরহুম আলাউদ্দিন ভাই, সাক্কু ভাই ( সিটি মেয়র ), মরহুম ডিলন ভাই, আমির ভাই আরও অনেকে। মুক্তিযোদ্বা বাচ্চু কমান্ডার, ধনী ব্যক্তি হিসাবে আমার পাশের বাসার জুনাব আলি ও ঠিকাদার খন্দকার হক। বৃহত্তর কুমিল্লার নামকরা ব্যবসায়ী মরহুম জাফড় খান রেসকোর্স এ জাফর খান সড়ক ও মরহুম সুজাত খান ~আর আমার শান্তিপ্রিয় বাবা ব্যবসায়ী মরহুম আবু ইউসুফ ( মরহুম সুজাত খানের নাতি ) পরিবহন ব্যবসায়ী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিধ মফিজুর রহমান বাবলু ও করম আলী(কে আলী) ব্যবসায়ী নুর ম্যানসন (নুর সাইকেল এর নুরু দাদা কান্দিরপার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইসহাক হুজুর ও ওহাব স্যার দৈনিক রূপসী বাংলা ,আমোদের বাকি ভাই , অনেক বীর মুক্তিযোদ্বা,অনেক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী। ফুটবলার ভানু দা রণজিৎ ক্রিকেটার এনামুল হক মনি ভাই।আমাদের সময়ের কিশোর তরুণদের প্রিয় ফুটবল কোচ মুজিব ভাই এবং গায়ক আসিফ। আর ভোরে ঘুম থেকে উঠেই পত্রিকার জন্য রঞ্জিত কাকু ইন্দ্রজিত কাকু আর মনটো। ওই আমলে আসলে আমাদের কুমিল্লা স্বর্গ ও ছিমছাম শান্তির শহর ছিল। আওয়ামী লিগ মিছিল বের করলে বিএনপি চুপ বিএনপি করলে আওয়ামী লিগ চুপ থাকত। রাজনিতিক প্রতিহিংসা মারামারি কদাচিৎ হত। ২ /৩ টা ক্লাব ছিল সদর হাসপাতালের সামনে মানব কল্যাণ, বোর্ড অফিসের স্পুটনিক, ভাট পারার বক্সিং,এরশাদ এর আমলে জাতীয় পাটির অফিস ছিল রূপকথা সিনেমা হল বিল্ডিং এর ২ তলায় বি এন পি অফিস আমাদের ২ তলায় (বর্তমান সাত্তার কমপ্লেক্স -এখন আমাদের নেই ),বাকশালের অফিস ছিল ভূঁইয়া মার্কেটের উপরে আওয়ামী লিগ এর রাম গাঁটলায়ে তখন জাতীয় পাটির সাথে ২ /৩ দিন পর পর আ লিগ / বিএনপি এর সাথে ধাওয়া পালটা ধাওয়া হরতাল কাদানি গ্যাস, মিছিল মিটিং এ পর্যন্ত । অই যে মোল্লার দৌর মসজিদ পর্যন্ত কেননা সকালে ঘুম থেকে উঠলে সব্বাই সবার চেহারা দেখতো সবাই কে সবাই প্রায় চিনত। কেননা ৯৫% ই ছিলেন স্থানীয়। আহা কি শান্তি ছিল। তখন কেহ অত টাকার মালিক ছিল না টাকা থাকলেও টাকার গরম কেহ দেখা তো না। টাকার প্রতি মোহও ছিলনা রাজনীতি টা এ ছিল বড় ব্যাপার। সেই ৯৭ /৯৮ এর পর থেকে এ শুরু হল টেন্ডার বাজি আর কাঁচা টাকা ইনকাম এর ধান্দা।এখন তো আমার কুমিল্লায় কোটি কোটি টাকার মালিকের অভাব নেই। শুনি খবর পাই আমার কুমিল্লা এখন আর আগের মত নাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ট্রাফিক জ্যাম আর অটো রিক্সসা ও রিকসার নগরী। তারপরেও আমার কুমিল্লা শহর আমার কান্দিরপার আমার জন্মস্থান ~~~~ আর আমার প্রিয় বন্ধুরা।

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: