21 March 2016

ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় - তনু মাফ করে দিস আমাদের


বিশেষ প্রতিবেদনঃ সেনানিবাসের ভেতরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
সেনানিবাসের ভেতরেই সোহাগীর হত্যাকাণ্ড কিছুতেই মানতে পারছে না তার সহপাঠীরা। বন্ধুদের প্রশ্ন ‘ক্যান্টনমেন্টেও মানুষ খুন হয়!

বান্ধবী মানুছরা সাথী তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে সোহাগী সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সন্ধ্যা ৫ টায় বের হয়েছ, প্রাইভেট পড়িয়ে আসার পথে, পিছন থেকে আঘাত, নাক বরাবর ঘুষি, চুলটেনে ছিরে ফেলেছে। বাবা খুঁজতে বের হয়েছে রাস্তায়। তার (সোহাগী) জুতা চুল, একটু দূরে মোবাইলটা, আর একটু দূরে তনুর লাশ, বাবা চিৎকার করে বলল মা, মা, মা, মা আমার।’
মানুছরা সাথী তার ফেসবুকে আরো লিখেছে, ‘ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সোহাগী তার মাকে বলেছিল, মা টেইলারের কাছ থেকে আমার নতুন জামাটা আজ নিয়ে আইসো, আমি কাল নতুন জামা পরে কলেজ যাবো।’

সোলেমান ফয়সালের স্ট্যাটাস- ‘এই সেলফিটা যেন সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে রয়ে গেল। গত ১৮ তারিখে আমি, মোর্শেদ ভাই আর তনু আপু তুলেছিলাম। একটু আগে খবর শুনতে পেলাম তনু আপু না কি আর বেঁচে নেই। তাকে না কি খুন করা হয়েছে।‘
বন্ধু নূর আলম বাপ্পির স্ট্যাটাস-  ‘Jani tui asbi na r ei nisthur prithibir tire. cole jacchis tui ondokar kobore. keno tui olpo somoy ase bondhukto kore cole geli ato dure.tor protita muhorto amay kaday, rakhte parchi na cokher jol dore.dos bole ki dakbi na amy ager moto kore. keno keno cole geli amader eka kore.’
সোহাগীর এক ফেইসবুক বন্ধু ও সহপাঠী আশিক খান ফেইসবুকে কমেন্ট লিখেছেন, ‘তনু ওরা তোমাকে বাঁচতে দিল না। তোমার গান নাচ আমার অনেক ভাল লাগতো v.c.t (ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার) তে যখন কোনো অনুষ্ঠান হত শত কাজ ফেলে আমি দেখতে যেতাম। আর সবচেয়ে ভাল লাগতো তোমার মুখের ভাইয়া কথাটা। ওরা তোমার লাশটাও দেখতে দিল না। ঘুম থেকে ওঠে যখন শুনলাম তুমি আর নেই, মনে হলো আকাশটা আমার মাথায় পড়লো। তাই আমি বারবার বলতাম আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাই কাদিতে পারি না।।।।’

সোহাগীর বান্ধবী নিলাম্বরী রাকা ফেইসবুকে স্ট্যাটাস লিখেছেন, ‘তনু হত্যার বিচার চাই।‘ তিনি সোহাগীর কয়েকটি ছবি আপলোড করে তার সাথে আরেকটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ছবি গুলি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম তোকে একটা কল দিব। আর বলব যে, তুই আসলেই সবার থেকে আলাদা। সবাই নিজের ছবি দিয়ে ভরিয়ে রেখেছে। আর তুই প্রকৃতিকে ভুলিস নি। আর বলা হল না। তোকে নিয়ে দেখা স্বপ্নগুলো আর হল না। তনু মাফ করে দিস আমাদের। ভালো থাকবি তুই।‘
ফেইসবুকে সেলিম রেজা কমেন্ট লিখেছেন ‘…..বিচারহীনতার সংস্কৃতির এই দেশে বিচার কী হবে? তবুও তীব্র ভাষায় বলতে চাই অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি ও সুবিচার নিশ্চিত করা হউক, হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করা হউক।’
বন্ধু সোহাগ সান্তনু তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বিশ্বাস করতে পারছিনা মাত্র ৮ ঘণ্টা আগে যে ইমুতে he..he…. লিখে হাসির অনুভূতি প্রকাশ করেছিল…….. চোখের জল বাঁধা মানছে না কিন্তু….. কেমনে বিশ্বাস করব বল বোন বল!
বলনারে তনু…..
কোথায় যাব আজ,
চাইবো বিচার কার?
ক্যান্টনমেন্টেও মানুষ খুন হয়!
লাশ পাওয়া যায় বনে!!!

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

0 facebook: