13 June 2015

ইপিজেডে বর্জ্য শোধনাগারের সুফল পাচ্ছে ১০,০০০ হেক্টর জমি


বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা ইপিজেডে কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ মে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ বর্জ্য শোধনাগার চালু হওয়ায় ইপিজেডের আশপাশের এলাকার কয়েকটি গ্রামের কৃষকের কমপক্ষে ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল, প্রাকৃতিক জীব, মাছ, জলজ প্রাণী ও পরিবেশ ক্ষতির হাত হতে রক্ষা পাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
কুমিল্লা ইপিজেড সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী কুমিল্লা মহানগরীর দক্ষিণাংশে ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে ২৬৭ দশমিক ৪৬ একর জায়গা নিয়ে কুমিল্লা ইপিজেড এর উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০০ সালের ১৫ জুলাই তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইপিজেডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনসহ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ ইপিজেডে ২৩৯টি শিল্প প্লট রয়েছে। নেদারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন, তাইওয়ান, ফ্রান্স, হংকং, মরিশাস, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগ করেছেন। এখানে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত উত্পাদন চলছে। এর মধ্যে ১৯টি বিদেশি, ৮টি যৌথ ও ১০টি দেশিয় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ২১ হাজার ২৫৭ জন বাংলাদেশি ও ২১৮ জন বিদেশি কর্মরত আছেন। তবে এ ইপিজেডে প্রথম থেকে তরল বর্জ্য শোধনাগার ছিল না। ফলে এর তরল বর্জ্যে খতিগ্রস্ত হচ্ছিল আশেপাশের এলাকার ফসলি জমি, পুকুর-জলাশয়। নষ্ট হচ্ছিল ফসল, মারা যাচ্ছিল মাছ ও জলজ প্রাণী।
ইপিজেড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনগণ প্রায়ই মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। এতে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে এ ইপিজেডে সিগ্মা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় ৩৮.৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। তখন থেকে প্রতিদিন রাসায়নিক ও জৈবিক উভয় পদ্ধতিতে এ প্লান্টে ১৫ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন করার কাজ চলে আসছিল।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এর মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানান, ‘কুমিল্লা ইপিজেডে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি পোশাক, টেক্সটাইল, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, ফুটওয়্যার, মেডিসিন বক্স, প্লাস্টিক পণ্য ও বিভিন্ন পণ্য উত্পাদন করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য শোধনাগারটি গত ২৫ মে উদ্বোধনের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব কারখানার তরল বর্জ্য পরিশোধনের কাজ সার্বক্ষণিকভাবে চলছে। এ বর্জ্য শোধনাগারে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে জৈবিক ও রাসায়নিক পদার্থ ধংস করার কারণে শোধিত পানি ফসল, জলজ প্রাণী কিংবা প্রাকৃতিক পরিবেশের কোন ক্ষতি করবে না।’

শেয়ার করুনঃ

Author:

কুমিল্লা অঞ্চলটি একসময় প্রাচীন সমতট অঞ্চলের অধীনে ছিল। পরবর্তীকালে এটি ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে যোগ দেয়। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে কুমিল্লা জেলা হরিকেল অঞ্চলের রাজাদের অধীনে আসে। অষ্টম শতাব্দীতে লালমাই ময়নামতি দেব বংশ এবং দশম থেকে একাদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত চন্দ্র বংশের শাসনাধীনে ছিল। ১৭৬৫ সালে এ অঞ্চলটি ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে আসে। ১৭৯০ সালে জেলাটি ত্রিপুরা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালে এর নাম পরিবর্তন করে কুমিল্লা রাখা হয়। ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা পৃথক জেলায় পরিণত হয়।