নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে নগরীতে বর্ণ্যাঢ্য আনন্দ র্যালী বের করা হয়। র্যালীতে সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার, জেলা প্রশাসক মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শাহ্ আবিদ হোসেন ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুলসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় কুমিল্লা। এ দিন বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মরহুম জহুর আহমেদ চৌধুরী দলীয় পতাকা ও কুমিল্লার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমদ আলী স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমান বন্দরে পাকবাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের প্রধান ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করে। মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্টের আর কে মজুমদারের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিমানবন্দরের তিন দিক থেকে আক্রমণ চালানো হয়। সীমান্তবর্তী বিবির বাজার দিয়ে লে. দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অপর দুটি দল গোমতী নদী অতিক্রম করে শহরের ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘেরচর দিয়ে এসে বিমান বন্দরের পাকসেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। রাতভর পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
কতিপয় পাকিস্তানি সেনা বিমান বন্দরের ঘাঁটি ত্যাগ করে শেষ রাতে কুমিল্লার বরুড়ার দিকে ও ময়নামতি সেনা ছাউনীতে ফিরে যায় এবং কয়েকজন আত্মসমর্পণ করে। এক পর্যায়ে পাকসেনাদের বিমানবন্দরের প্রধান ঘাঁটি দখলে নেয় মুক্তিসেনারা। আর এভাবেই একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভোরে কুমিল্লা হানাদার মুক্ত হয়। এদিন ভোর থেকে মুক্তিসেনারা শহরের চকবাজার, রাজগঞ্জ, টমছমব্রিজ ও গোমতী পাড়ের ভাটপাড়া দিয়ে আনন্দ উল্লাস করে শহরে প্রবেশ করে। তখন রাস্তায় নেমে আসে বিজয় উল্লাসে উদ্বেলিত জনতার ঢল। কুমিল্লার আপামর জনগণ ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে মুক্তির উল্লাসে বরণ করে নেয় মুক্তিসেনাদের।
0 facebook: