18 August 2017

 ১০ কারণে কুমিল্লা নগরে জলাবদ্ধতা

১০ কারণে কুমিল্লা নগরে জলাবদ্ধতা


কুমিল্লা নগরে ১০টি কারণে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। যার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে শহরের সড়ক ও বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে নাকাল হয়ে পড়েছে শহরের বেশির ভাগ মানুষ। পানি নামার সব পথ রুদ্ধ হওয়ায় এককালের সাজানো-গোছানো-পরিপাটি কুমিল্লা শহর এখন শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। আবাসিক শহরের এমন বিপর্যয় ঠেকাতে দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলছেন নগরবিদেরা।
কুমিল্লা শহরের আদি বাসিন্দা ও নগর ভবনের প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নগরের পানি নামার অন্তত ১০টি পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে কুমিল্লা নগরের টমছমব্রিজ মসজিদের নিচে কান্দিখালের প্রস্থ কমে যাওয়া ও খালের মধ্যে পিলার থাকা, বিসিক শিল্পনগরী লাগোয়া রেললাইনের পানি নামার পথ বন্ধ, বদরপুর রেলওয়ের অপ্রশস্ত কালভার্ট, দক্ষিণচর্থা ইপিজেড এলাকার নাসা স্পিনিং মিলের কারণে পানিপ্রবাহের পথ রুদ্ধ হওয়া, চাঁনপুর পুরাতন গোমতী নদীর স্তর ওপরে থাকা, কান্দিরপাড় সিটি হার্ট বিপণিবিতান এলাকার খালের প্রস্থ কমে যাওয়া, রেইসকোর্স রেলসেতুর সামনে খাল ভরাট, কাঠেরপুল খালের মধ্যে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি, কান্দিরপাড় সিটি মার্কেট লাগোয়া নালার মধ্যে পিলার ও অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ।
গত বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি নামার রুদ্ধ জায়গাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, রেললাইনের কালভার্টের পানি নামার জায়গা ভরাট রয়েছে। সেখানে প্লট করা হয়েছে। দক্ষিণচর্থার যে পথ দিয়ে পানি নামত, সেখানে কুমিল্লা ইপিজেডের নাসা কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। কান্দিরপাড়ের টাউন হল লাগোয়া সিটি মার্কেট তৈরির সময় নালার মধ্যে পিলার বসানো আছে। এতে করে পানিপ্রবাহ এক প্রকার বন্ধই রয়েছে। একই অবস্থা কান্দিরপাড় সিটি হার্ট বিপণিবিতানের খালের। আগে ওই খাল ছয় ফুট প্রস্থ ছিল, এখন সেটি সাড়ে তিন ফুটে নেমে এসেছে। কাঠেরপুল খালের মধ্যে যত্রতত্র পিলার বসিয়ে ব্যক্তিগত কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
কুমিল্লার ইতিহাসবিদ গোলাম ফারুক বলেন, ‘১৯২১ সালে কুমিল্লা টাউন সার্ভে (জরিপ) হয়েছিল। তখন শহরের কোথায় 
কী হবে, তা উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু সে জরিপের তোয়াক্কা না করে বাসাবাড়ি বানানো হচ্ছে। কুমিল্লা শহরের পানি নামার অন্তত ১০টি পথ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা ক্রমেই দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। আমাদের ছেলেবেলায় কুমিল্লা শহর অত্যন্ত সুন্দর ছিল। এখন সেই রূপ আর নেই। শহরকে সুন্দর রাখার জন্য কুমিল্লা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করতে হবে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণের কারণে বাসাবাড়ির পানি নামতে পারছে না। যে যার মতো করে ইমারত নির্মাণ করছে। কেউ বিধিমালা মানছে না।
কুমিল্লার প্রকৌশলী আবুল বাশার বলেন, কুমিল্লা নগরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য ১৯৯৬ সালে বিভিন্ন দপ্তরের প্রকৌশলীদের নিয়ে একটি সভা হয়েছিল। ওই সভায় নানা ধরনের কর্মকৌশল ঠিক করা হয়। এরপর সেটি আর এগোয়নি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখ মো. নুরুল্লাহ বলেন, পানি নামার সব উৎসমুখ ভরাট করা হয়েছে। নগরবাসী সচেতন না হলে জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব নয়।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা থাকতে হবে। এগুলোর দৈন্যের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় হচ্ছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণসহ কুমিল্লাকে একটি পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক শহর হিসেবে তৈরি করতে মহাপরিকল্পনা প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী নগরের জলাবদ্ধতা দূর করা হবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো

31 July 2017

ঘুরে আসুন কুমিল্লা ঢুলিপাড়ার ফানটাউনে

ঘুরে আসুন কুমিল্লা ঢুলিপাড়ার ফানটাউনে


মাত্র এক বছরে কুমিল্লার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ভার্চুয়াল ফান টাউন। গত পহেলা বৈশাখে নগরীর ঢুলিপাড়া এলাকায় এ বিনোদন কেন্দ্রটি যাত্রা শুরু করে। যাত্রা শুরুর পর থেকে আধুনিক মানের সর্ববৃহৎ এ বিনোদন কেন্দ্রে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী।
কুমিল্লা নগরীর মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় একটু অবসরেরই সকলে সপরিবারে বিনোদনের জন্য ছুটছেন ফান টাউনে। চমকপ্রদ সব রাইড আর মনমুগ্ধকর পরিবেশ সব বয়সী মানুষকে আকৃষ্ট করে।
ফান টাউনে রয়েছে 15D সিনেমা থিয়েটার। নাগরদোলা, ট্রেন, বাম্পার কার, প্যাডেল বোট, সুইংচেয়ার, মেরিগো রাউন্ড, সেল্ফ কন্ট্রোল এরোপ্লেন ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য ইনডোর ও আউটডোর রাইড যা কুমিল্লার আর কোন বিনোদন কেন্দ্রে নেই।
এছাড়া বিশেষ বিশেষ দিবসে ফান টাউনে থাকে আকর্ষণীয় সব আয়োজন। কোন প্রতিষ্ঠান অথবা যেকেউ চাইলে ফান টাউনে আয়োজন করতে পারে কনসার্ট, ডিজে কিংবা যে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে প্রথম বর্ষপূর্তি ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ৮ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ভার্চুয়াল ফান টাউন। ১৩ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এ উৎসবে প্রতিদিনই থাকবে নানা ধরনের ব্যাতিক্রমি আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ভার্চুয়াল ফান টাউনের ব্যবস্থাপক নুরে আলম জিকো জানান, আগামী পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রথম বর্ষপূর্তি। বর্ষপূর্তি আমরা বিশেষ সব আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালন করব। এছাড়া অন্যান্য দিবসের মত বাংলা নববর্ষ উপলক্ষেও থাকবে বিশেষ আয়োজন। ১৩ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮ দিনিরে “বাঙ্গালী সংস্কৃতির মহা উৎসব ১৪২৪” পালন করব আমরা।
ভার্চুয়াল ফান টাউনের স্বত্বাধিকারী পারভেজ আহমেদ জানান, কুমিল্লাসহ আশেপাশের জেলার মানুষের বিনোদনের জন্য আমি এ বিনোদন কেন্দ্রটি করেছে। ইতিমধ্যে গত একবছরে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। প্রথম বর্ষপূর্তি ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত সকল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে সবাইকে আমন্ত্রন জানাচ্ছি।

23 July 2017

কুমিল্লা বোর্ডে ফল বিপর্যয়ের কারণ

কুমিল্লা বোর্ডে ফল বিপর্যয়ের কারণ


২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ভয়াবহ ফল বিপর্যয়ে পড়েছে কুমিল্লা বোর্ড। গেল বছরে যেখানে পাসের হার ছিল ৮৪ শতাংশ। হঠাৎ করেই এ বছর প্রায় অর্ধেকে নেমে ৪৯.৫২ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ৬৭৮ জন।
দেশের সব শিক্ষা বোডের্র মধ্যে কুমিল্লা বোর্ডের অবস্থান একেবারেই তলানিতে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। শিক্ষকরাও হতবাক হয়ে গেছেন।
সূত্রমতে, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে পাসের হার কোনোভাবেই ৯০ থেখে ৮৪ শতাংশের নিচে আসেনি। ২০১৩ সালে এ হার ছিল ৯০.৪১ শতাংশ। পরের বছর ২০১৪ সালে পাস করে ৮৯.৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী। এরপর ২০১৫ সালে এসে পাসের হার দেখা গেছে ৮৪.২২ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থীরা পাস করে। 
গেল তিন বছরে পাসের হার নিম্নগামী দেখা গেলেও তা যে অর্ধেকে নেমে আসবে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। রোববার (২৩ জুলাই) ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু শিক্ষক বলছেন, এইচএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় যার ফেল করে তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় সুযোগ দেয়া হচ্ছে। আর এটা হচ্ছে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের তদবিরে। এ কারণে পাসের হারে এমন বিপর্যয় দেখা গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল করছে তাদের প্রভাবশালী আত্মীয় স্বজন প্রভাব খাটিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার অনুমোদন দিতে শিক্ষকদের বাধ্য করছেন। যার ফলে এমন পরিণতি দেখা গেছে। 
তবে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমদ বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি মনে করছেন গণিত ও ইংরেজিতে ফলাফল খারাপ করছে পরীক্ষার্থীরা। এর প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক ফলাফলে। তবে তার দাবি, শহর কেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো ফলাফল হয়েছে।

22 July 2017

কুমিল্লা বিভাগের নাম হবে ময়নামতি, কুমিল্লা অথবা লালমাই

কুমিল্লা বিভাগের নাম হবে ময়নামতি, কুমিল্লা অথবা লালমাই


বহুল আলোচিত কুমিল্লা বিভাগের নাম ময়নামতি, কুমিল্লা অথবা লালমাই – এ তিনটির যেকোন একটি হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে স্থানীয় সময় ১৯ জুলাই বুধবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘের হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরামে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণ পরবর্তী এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কুমিল্লা বিভাগ হয়ে গেছে। নামকরণের বিষয়টিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যেকোন সময় এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।
“দারিদ্র্য নির্মূল এবং পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক জাতিসংঘের ‘হাই লেভেল পলিটিক্যাল ফোরাম (এইচএলপিএফ)’ এর কার্যক্রম শুরু হয় গত ১০ জুলাই থেকে। এটি শেষ হয় ১৯ জুলাই।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে ২২ সদস্যের একটি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এ সম্মেলনে যোগ দেয়। সম্মেলনে যোগদানের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতেই মূলত এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূরএলাহী মিনার সঞ্চালনায় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কারি আবুল কালাম আজাদ, স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

16 July 2017

কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের বেহাল দশা

কুমিল্লা-নোয়াখালী মহাসড়কের বেহাল দশা


কয়েক মাস ধরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন এই সড়কে চলাচল করা হাজারো গাড়ির যাত্রীরা। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে সময় নষ্ট, যানজট আর গাড়ি বিকল হওয়ায় ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকরা। কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৭২ কিলোমিটারের অধিকাংশই ভাঙা।
যাত্রী ও পরিবহন চালকরা জানান, কুমিল্লা পদুয়ার বাজারের পর থেকে ভাঙা শুরু। সেখানে কিছু ইট ফেলায় তা বিষফোঁড়ার মতো ফুলে উঠেছে। সেখানে গাড়ি চলছে হেলেদুলে। ধীর গতিতে গাড়ি চলায় সেখানে প্রায় যানজট লাগছে। বেশি ভয়াবহ অবস্থা বাগমারা বাজার ও লাকসাম জংশনের উত্তর দিকে। সেখানে গর্তে গাড়ির চাকা আটকে যাচ্ছে। ভাঙার কারণে বাগমারা বাজারে প্রতিনিয়ত যানজট লাগছে। এছাড়া লালমাই, হরিশ্চর, লাকসাম বাইপাস,খিলা, নাথেরপেটুয়া, বিপুলাসার, সোনাইমুড়ি, বেগমগঞ্জ থানা এলাকাসহ মাইজদীর বিভিন্ন অংশে ভাঙা রয়েছে।  
লাকসামের পোলাইয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান নামের একজন বাসযাত্রী জানান, ২-৩ মাস ধরে এ সড়কে স্বাভাবিক ভাবে যাতায়াত করা যায় না। বাস চলাচলের পর শরীরের গিটে গিটে ব্যথা হয়। মনে হয় চিকুনগুনিয়ার ব্যথা।
উপকূল বাস সার্ভিসের চালক মামুনুর রশিদ জানান, সড়ক ভাঙা হওয়ায় ঘন ঘন গাড়ি বিকল হচ্ছে। ভাঙা অংশ এলে যাত্রীরা ঝাঁকুনির ভয়ে বাস থেকে নেমে যেতে চান। দ্রুত সড়কটি মেরামত করা না হলে গাড়ি চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
কুমিল্লা জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহমেদ বলেন, কয়েক মাস ধরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেহাল অবস্থা। আমাদের গাড়ি গুলো গর্তে পড়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে। যানজট লাগছে, যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছেন। সড়কটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।
সড়ক ও জনপদ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মুহম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, আমরা কিছু অংশে ইট দিয়ে সংস্কার করেছি। এসড়কে ৫-৬মাসের মধ্যে ফোরলেনের কাজ শুরুর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে আমরা পদক্ষেপ নেবো।

29 June 2017

কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোতে মানুষের ভীড়

কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোতে মানুষের ভীড়


দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান কুমিল্লা ময়নামতি শালবন বিহার। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের ছুটিতে দূর-দুরান্ত থেকে বেড়াতে আসা মানুষ ভীড় জমাচ্ছেন কুমিল্লার গর্বের এই দর্শনীয় স্থানে।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর উৎসবমুখর পরিবেশে গত সোমবার পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। এই উৎসবকে ঘিরে বন্ধুবান্ধব আর পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে সাধারণ মানুষ ছুটে আসছেন কুমিল্লার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। কুমিল্লা ময়নামতি শালবন বিহার ও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের সমাধিক্ষেত্র ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) শাহ সুজা মসজিদ, ধর্মসাগর, রূপসাগর, বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ, রূপবানমুড়া কুটিলামুড়া, বার্ডসংলগ্ন জোড়কানন দীঘি, জগন্নাথ দীঘি, বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন, রামমালা পাঠাগার ও নাটমন্দির, লাকসাম রোড, নবাব ফয়জুন্নেছার বাড়ি, সঙ্গীতজ্ঞ শচীনদেব বর্মণের বাড়ি, রাজেশপুর বন বিভাগের পিকনিক স্পট, গোমতি নদী, কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী বেগম নার্গিসের বাড়ি, নবাব ফয়জুন্নেছার পৈতৃক বাড়ি ও কুমিল্লা চিড়িয়াখানাসহ অর্ধশতাধিক দর্শনীয় স্থান হাজার হাজার পর্যটকদের ভিড়ে হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
কুমিল্লার এইসব দর্শনীয় স্থনে শুধু দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নয় বিদেশি দর্শনার্থীদের দেখা মিলেছে অনেক বিদেশী দর্শনার্থীদেরও। তাইতো ঈদের ছুটিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে কুমিল্লা শালবন বিহারসহ জেলার বিভিন্ন বিনোদন স্থান গুলোতে। আবার কেউবা এসেছেন প্রিয়জনের সঙ্গে।
বাবা-মায়ের হাত ধরে ছেলে, ভাই বোন নিয়ে অনেকেই এসেছেন বিনোদনের জন্য।
ফেনী জেলা থেকে বেড়াতে আসা সুজন হোসেন বলেন, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সপরিবারে বেড়াতে এসেছি কুমিল্লা শালবন বিহারে। এসে দেখেছি শালবন বিহার শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি এখন বিশ্বের একটি ঐতিহাসিক স্থান। এই স্থানটিকে একনজর দেখতে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসে এখানে। সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি আলী আকবর মাসুম বলেন, ময়নামতি জাদুঘর, শালবন বিহারসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শন দেখতে মানুষের প্রচুর আগ্রহ রয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় অন্য জেলার মানুষও কুমিল্লায় সহজে আসতে পারেন। তবে কোটবাড়ি এলাকায় আবাসিক ব্যবস্থা থাকলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে।