26 July 2015

প্রাণিশূন্য হচ্ছে কুমিল্লার বনাঞ্চল

প্রাণিশূন্য হচ্ছে কুমিল্লার বনাঞ্চল


নিজস্ব প্রতিবেদক: দিন দিন প্রাণিশূন্য হচ্ছে কুমিল্লার বনাঞ্চল। এখানে আগের মতো পাখির কুঞ্জন নেই, নেই বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ। পাঁচ বছর আগেও কুমিল্লার বনাঞ্চলে খরগোশ, বানর, সজারু, খেঁক শিয়াল, বেজি, কাঁঠ বিড়ালী, উঁদসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণি দেখা যেতো।
সমপ্রতি এগুলোর উপস্থিতি কমে গেছে। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের সূত্রমতে, জেলায় সরকারি এক হাজার ৬৮৯ দশমিক ৮৩ একর বনাঞ্চল রয়েছে। এরমধ্যে কোর্টবাড়ীতে ৫১৬.০৬, সদর দক্ষিণের রাজেশপুরে ৫৮৭.৮৯, সদর দক্ষিণের যশপুরে ৪৫০.০৬, চৌদ্দগ্রামের আমানগন্ডায় ৭৮.৮৩ এবং সদরের জামবাড়িতে ৫৬.১৮ একর।
বনাঞ্চলের রাজেশপুর এবং কোর্টবাড়ীতে বেশি বন্যপ্রাণির দেখা মিলত। রাজেশপুরে ছয় বছর আগের জরিপে ছয় প্রজাতির উভচর, ৪০ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২৮ প্রজাতির পাখি ও ২৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণি ছিল।
বন্যপ্রাণি নিয়ে কাজ করা ওয়াইল্ড ওয়াচ ইনফো সংগঠনের সভাপতি জামিল খান জানান, বনাঞ্চলের মধ্যে জনবসতি গড়ে উঠায় বন্যপ্রাণী তার পরিবেশ হারাচ্ছে।
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, কুমিল্লায় সচেতনতার অভাবে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমছে। বন্যপ্রাণী রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
বুড়িচংয়ের গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা

বুড়িচংয়ের গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা


বুড়িচং উপজেলার ৮ ইউনিয়নের গ্রাম-গঞ্জ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সড়ক ও রাস্তা ঘাটের কার্পেটেনিং উঠে পলেস্তরা খসে গিয়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানবাহন ও সাধারণ মানুষ চলাচলের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে এলাকার সড়ক-রাস্তা গুলো বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। 

এলাকার জন সাধারণ যানবাহন নিয়ে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে নিত্যদিন  চলাচল করতে হচ্ছে। কোন কোন সড়কে যানবাহনের চালকেরা নিজেদের অর্থায়ানে সড়কের গর্তে শুরকি, কংকিট ও বালু ফেলে গর্ত ভরাট করে কিছুটা চলাচলের ব্যবস্থা করছে। আবার বৃষ্টি পানিতে সড়কগুলো ইট বালি সরে গিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসছে।

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনসাধারণের চলাচলের সড়কগুলোর কার্পেটেনিং এবং কংক্রিট  সড়কের মধ্য থেকে উঠে গিয়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে বৃষ্টি পানি জমে গিয়ে সড়কগুলো মধ্যে খানে মিনি পুকুর সদৃশ মনে হয় । 

এছাড়া, ৮ ইউনিয়নের এ বিশাল জনপদে  গ্রামীণ জনপদের দুই শত বছরের ও পুরনো বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক স্কুল কলেজে পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রী চলাচল করলেও এখনো ওই সমস্ত রাস্তাগুলো কাঁচা রাস্তা হিসেবেই রয়ে গেছে।  

এ সমস্ত রাস্তা গুলো হলো: চড়ানল-লড়িবাগ-বারেশ্বর মাদ্রাসা রাস্তা - ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নগড়পাড়-বারেশ্বর- সাহেবাবাদ বাজার সংযোগ রাস্তা। 

ওই সমস্ত গ্রামীণ রাস্তা গুলো দিয়ে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী গ্রাম বারেশ্বর, লড়িবাগ, চড়ানল, পূর্ণমতি, টাকই, জিরুইন, ভরভাঙ্গাইন্না ও সাহেবাবাদ গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মোশারফ খান কলেজ, ব্রাহ্মণপাড়া ভগবান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সাহেবাবাদ ডিগ্রী কলেজ, সাহেবাবাদ লতিফা ইসলাইল উচ্চ বিদ্যালয়, সাহেবাবাদ ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা, বারেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়, বারেশ্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়দ্বয়, বারেশ্বর সাইয়্যেদ লোদীশাহ একাডেমী ,  বারেশ্বর মাদ্রাসা, লড়িবাগ উচ্চ বিদ্যালয় ও লড়িবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়, চড়ানল মাদ্রাসা ও চড়ানল প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাচোঁড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে  রাস্তার মাটি ক্ষয়ে যাওয়ায় অনেক টাকা যাতায়াত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। 

এছাড়া, রাস্তা-সড়ক গুলো বেশির ভাগ ভাঙ্গা ও মাটি ক্ষয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণ মারাত্ম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। 

অধিকন্তু, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলো অবস্থা একেবারে নাজেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। অধিকাংশ  সড়কের অবস্থা এমন হয়েছে যে, ছোট খাট যানবাহন চলাচলের ও অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এলাকার ক্ষুব্ধ জনসাধারণ ৩-৪ বছর পূর্বে ভাঙ্গা সড়কগুলো সংস্কারের দাবীতে সড়কের মধ্যে ধানের চারা রোপন করে  প্রতিবাদ জানিয়ে ও ফল পায়নি। 

অপরদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়- এক শ্রেণির অসাধু বালু মাটি ব্যবসায়িরা গোমতি নদী চর এবং আশ পাশ এলাকা দিয়ে দৈনিক ২-৩ শ’ত  ট্রাক্টরে মাটি-বালি ভরাট করে সড়কের উপর দিয়ে আসা যাওয়ার ফলে ভগ্ন ও চলাচলের ঝুঁকি পূর্ণওই  সড়কগুলো র আরও বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এতে করে ওই সড়ক গুলো দিয়ে যানবাহন নিয়ে এলাকা জনসাধারণ চলাচল করতে পারছেনা। প্রায় সময় যাত্রী বাহি যানবাহন গুলো চলাচলের সময় সড়ক থেকে ছিটকে সড়কের পাশে পড়ে যায় এবং দূর্ঘটনার শিকার হয়। এতে করে প্রায় সময় জনসাধারণরে প্রাণ হানির মত ঘটনা ও অহরহ  ঘটছে। 

এছাড়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাথে উপজেলার ভগ্ন সড়ক গুলোর যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকায় উপজেলা সদরের অফিস আদালতে, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগী নিয়ে যাতায়াতে সময় ক্ষেপন সহ ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির জনসাধারণ প্রতিদিনেই আসা যাওয়া করতে হয়। অনেক সময় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উপজেলা সদরে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রোগি নিয়ে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে আসতে দারুন সমস্যায়  পড়তে হয়। সড়ক গুলোর এমনি অবস্থা যে সমস্ত সড়কগুলো খানা খন্দে ভরে গিয়ে বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে । 

এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য সড়ক ও রাস্তাগুলো হলো:  বুড়িচং- গোবিন্দপুর-রামপুর পোষ্ট অফিস সড়ক- গোবিন্দপুর বাজার গোমতি প্রতিরক্ষা বাধ- কোমাল্লা সড়ক, বুড়িচং-আরাগ আনন্দ পুর- সাদকপুর, সাদকপুর- পীরযাত্রাপুর-গোবিন্দপুর সড়ক, সাদকপুর-মালাপাড়া-কংশনগর, বুড়িচং আগানগর-শিকারপুর-নানুয়ার বাজার, বুড়িচং- জগতপুর ঈদগা- পূর্ণমতি সড়ক।  

এছাড়া ষোলনল ইউনিয়নের প্রায় সড়কে বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বলে জানান ওই ইউপির চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন। ওই ইউনিয়নের 

ভরাসার বাজার-ষোলনল-বাবুর বাজার, শিমাইলখাড়া-সোনাইসার-পূর্বহুরা, কাহেতরা-পূর্বহুরা সড়কের দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশা চলছে। বাকশীমূল ইউনিয়নের সীমান্ত অঞ্চলের প্রায় ১০-১২টি সড়কের অবস্থা ও একেবারে করুণ। এর মধ্যে কালিকাপুর-শ্রীমন্তপুর, কালিকাপুর-আনন্দপুর, ফকিরবাজার এলাকার কয়েটি সড়কের অবস্থা বেহাল দশা। রাজাপুর ইউনিয়নের সীমান্তের চড়ানল-নবীয়াবাদ-লড়িবাগ সংযোগ সড়ক, পাঁচোড়া-চড়ানল-লড়িবাগ-বারেশ্বর-নগরপাড়-সাহেবাবাদ সড়ক, বারেশ্বর চৌমুহনি-পাঁচোড়া সিন্দুরিয়া ব্রীজ- হায়দ্রবাদ পর্যন্তসড়ক। 


বাকশীমূল ইউনিয়নের ফকিরবাজার-আনন্দপুর- শ্রীপুর সড়ক ও ধর্মনগর- জামতলা- আজ্ঞাপুর এবং ছিনাইয়া ও কোঁদালিয়া সড়ক সহ বাকশীমূল হতে খাড়াতাইয়া- মহিষমারা কাঁচা রাস্তা বেহাল দশা। মোকাম ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির জানান- যে ওই ইউনিয়নের সড়কগুলো একেবারে করুন অবস্থায় পরিণত হয়ে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। 

সড়কগুলো হলো- নিমসার -কেদারপুর-বরুড়া সড়ক, নিমসার- ভারেল্লা-কংশনগর সড়ক, কোরপাই- আবিদপুর -ভারেল্লা সড়ক, কোরপাই-পিওর -চান্দিন-বড়কুট-পরিহলপাড়া সড়ক, পরিহল পাড়া- রোপদ্দি- পাঁচকিত্তা সড়ক, কাবিলা বাজার-বাড়াইর সড়ক, মোকাম গ্রামের  দক্ষিনাংশের দেড় কি: মি: সড়ক, মাধবপুর-নিমসার-শ্যামপুর বড় বাড়ী পর্যন্ত, কোরপাই-মিথলমা-আবিদপুর সড়ক পর্যন্ত। 

ময়নামতি ইউপির চেয়ারম্যান মো. লালন হায়দার জানান- ওই ইউনিয়নের কুমিল্লা-সিলেট  মহাসড়কের দেবপুড়-জিয়াপুর- চান্দসার, দেবপুর-কাছারীতলা-চান্দসার হাই স্কুল সড়ক, কুমিল্লা-–সিলেট মহাসড়কের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার সড়ক- সিন্দুরীয়াপাড়া, নাজিরাবাজার-নারায়নসার-করিমাবাদ, কালাচকুয়া-করিমাবাদ সড়ক, হরিণধরা-দেবপুর সড়ক, চান্দসার-কাবিলা সড়ক, ময়নামতি সাহেব বাজার-সমেষপুর-সিন্দুরিয়াপাড়া সড়ক, ফরিজপুর-মিরপুর সড়কের বেহাল দশায় জনগণ ও যান বাহন চলাচলে ব্যাপক অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। 

বুড়িচং সদর ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের বিভিন্ন সড়ক, বিজয়পাড়া -জরইন সড়ক, পূর্ণমতি গ্রামের বিভিন্ন সড়ক। ভারেল্লা ইউনিয়নের পারুয়ারা আবদুল মতিন খসরু কলেজ সড়ক- কুসুমপুর-রামচন্দ্রপুর সড়ক-হাসনাবাদ সড়ক, রামপুর বিচারপতি মমতাজ উদ্দীন আহম্মেদ সড়ক- শোভারামপুর-ভারেল্লা সড়ক, রামপুর পোষট অফিস-ভারেল্লা সড়ক, ভারেল্লা-নারাচুর সড়ক সহ গ্রামীণ এলাকার  বিভিন্ন সড়ক। 

এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ বলেন-এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকার ভাঙ্গাচোরা সড়কগুলোর সংস্কার না করার ফলে সড়কগুলো দিন দিন আরো  ভেঙ্গে গিয়ে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু তাহের জানান- উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গ্রামীণ সড়কগুলোর অধিকাংশ সংস্কার এবং অনেক নতুন সড়কের নির্মাণ কাজ  আমরা  সম্পন্ন করেছি। পর্যায়ক্রমে বাকী যে সড়কগুলো বেহাল অবস্থা রয়েছে সেগুলোর কাজ ও আমরা সম্পন্ন করবো।

10 July 2015

কুমিল্লার পাসপোর্ট কার্যালয়ে হয়রানি বন্ধ করার দাবি

কুমিল্লার পাসপোর্ট কার্যালয়ে হয়রানি বন্ধ করার দাবি


নিজস্ব প্রতিবেদক: পাসপোর্ট কার্যালয়ে হয়রানি ও দালাল চক্রের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার দাবি জানিয়েছে কুমিল্লার নাগরিক সমাজ। একই সঙ্গে পুলিশি ভেরিফিকেশনের নামে টাকা আদায় ও হয়রানির প্রতিকার চেয়েছে তারা। পাসপোর্ট-সেবাকে জনমুখী করার লক্ষ্যে গত বুধবার কুমিল্লায় আয়োজিত এক ‘গণশুনানি ও সোশ্যাল মিডিয়া আড্ডা’য় ওই দাবি জানানো হয়।'

জেলা প্রশাসন ও কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট দপ্তরের যৌথ আয়োজনে ওই আড্ডা হয়। এতে নগরের বিভিন্ন পেশাজীবী অংশ নেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বেলা একটায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে ওই আড্ডা হয়। আড্ডায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এন এম জিয়াউল আলম। বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই (একসেস টু ইনফরমেশন) কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ মানিক মাহমুদ, কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ। একই সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম ও দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এন এম জিয়াউল আলম বলেন, সারা দেশে ১ কোটি ১০ লাখ লোকের হাতে মেশিন রিডেভল পাসপোর্ট (এমআরপি) রয়েছে। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ হাজার এমআরপি পাসপোর্ট প্রিন্ট করে দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২৪ নভেম্বরের মধ্যে হাতের লেখা পাসপোর্ট বাতিল করা হবে। 

কুমিল্লা অঞ্চলে বিদেশগামী লোকের সংখ্যা বেশি। ওই হিসেবে কুমিল্লা পাসপোর্ট কার্যালয় সারা দেশের মধ্যে একটি ব্যস্ত অফিস। এ কার্যালয়ে এখন আর দালাল চক্রের মাধ্যমে আগের মতো হয়রানি হওয়ার সুযোগ নেই। পাসপোর্ট-সেবাকে জনমুখী করার জন্য সরকার গণশুনানি ও সোশ্যাল মিডিয়া আড্ডার আয়োজন করেছে। দেশের আটটি স্থানে ওই আড্ডা হয়।

গণশুনানিতে কুমিল্লার নাগরিক সমাজের অন্তত ১০ ব্যক্তি বলেন, পাসপোর্ট করতে গেলে পুলিশি ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি করা হয়। একই সঙ্গে দালাল চক্রের কাছে কুমিল্লা পাসপোর্ট কার্যালয় জিম্মি হয়ে আছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রশাসনের কাছে তাঁরা সহযোগিতা চান। একই সঙ্গে পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর করার পক্ষে মত দেন তাঁরা।

ভিডিও কনফারেন্সে মো. আবদুল্লাহ বলেন, পাসপোর্ট-সংক্রান্ত ভোগান্তি মানুষের দীর্ঘদিনের। সারা দেশের ৬৭টি অফিসে অনলাইনে পাসপোর্ট-সেবা দেওয়া হচ্ছে। আরও সহজভাবে কীভাবে সেবা দেওয়া যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে।

05 July 2015

বেদখলের পথে ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের কুমিল্লার বাসভবন

বেদখলের পথে ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের কুমিল্লার বাসভবন


কুমিল্লা শহরের ধর্মসাগর পাড় ঘেষে বয়ে যাওয়া রাস্তার পাশে একটা জড়াজীর্ণ পরিত্যক্ত টিনসেড চোখে পড়ে তাতে এতদিন বস্তি হিসাবে একটা পরিবার বাস করত , এই বাড়ীটির সামনে নারকেল গাছে প্যানাপ্লেক্সের ছিড়া একটা ব্যানারে লেখা ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাসভবন
একসময় এই বাড়িতেই বাস করতেন অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক বাঙালী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
এই বাড়িটি নিয়ে বিগত দিন চলেছে অনেক আলোচনা ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এখানে নানা আয়োজন করার কথাও হয়েছে বহুবার
ভুমি দস্যুরা বারবার থাবা ফেলেছে এখানে, তখন কিছু একটা করার নামে আন্দোলন হয়েছে পরিকল্পনা হয়েছে বাংলাদেশে থাকা তার নাতনী এরোমা দত্ত নিজেও বলেছেন এখানে একটা যাদুঘর করতে চান যাতে তার এই বাড়িটি বাংলা ভাষা আন্দোলনের একটা স্মৃতিচিহ্ন হয়ে টিকে থাকে
কিন্তু সব পরিকল্পনা বাদ দিয়ে জানা গেল এই মহান বাঙালীর স্মৃতি বিজরিত বাসভবনটি গ্রাস করেছে বৃত্তবান ভুমি দস্যুরা , তারা সহসা মুছে ফেলবে এই অকৃত্রিত বাঙালীর সব স্মৃতিচিহ্ন তাই কুমিল্লাবাসীর প্রত্যাশা এই বাড়িটি সংরক্ষণ করে এখানে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি যাদুঘর গড়ে তোলা হোক , যাতে এই মহান বাঙালীকে মানুষ ভুলে না যায়
১৯৪৭ সালে যখন পাক ভারত বিভক্ত হয় তখন ধর্ম ভিত্তিতে দুই দেশের মানুষ যার যার সুবিধাজনক স্হানে চলে যায় , এরমধ্যে পাকিস্তান থেকে অধিকাংশ হিন্দু ভারতে চলে যায় এবং ভারত থেকে অধিকাংশ মুসলমান পাকিস্তান চলে যায় কিন্তু এই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সেই মানুষটি যিনি ধর্ম ভিত্তিতে নয় বরং জন্মভুমি হিসাবে পুর্ব পাকিস্তানকে ভালবেসে আজকের এই বাংলাদেশে রয়ে গেলেন
এই সময়ে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সর্বপ্রথম পার্লামেন্টে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে বক্তব্য রাখেন
বাস্তবিকপক্ষে তার এই উপস্হাপনাই বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রথিকৃৎ হিসাবে বিবেচিত হয়
দেশ জন্মস্হান আর ভাষাকে ভালবেসে পুর্ব পাকিস্তানে থেকে যাওয়া এই মহান বাঙালী প্রথম থেকেই পষ্চিমাদের কুদৃষ্টিতে পড়েন , বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি হিসাবে তারা ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময় তার বাসভবন থেকে ধরে কুমিল্লা সেনানিবাসে নিয়ে যান
বর্বর পাক সেনারা সেদিন বাংলা ভাষা আন্দোলনের চুলোয় সর্বপ্রথম অগ্নি প্রজ্জলনকারী এই মহান বাঙালীকে ধরে নিয়েই নিমিশে হত্যা করেননি , তারা তাকে নিষ্ঠুর বন্দিশালায় আটকে রেখে বেয়োনেটের নির্মম খুচায় তীল তীল যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করেন পরে আর কোনদিন তার মৃতদেহ পাওয়া যায়নি

01 July 2015

কুমিল্লা মেঘনার দু’টি সেতু পাল্টে দিয়েছে লাখো মানুষের জীবনযাত্রা

কুমিল্লা মেঘনার দু’টি সেতু পাল্টে দিয়েছে লাখো মানুষের জীবনযাত্রা


নিজস্ব প্রতিবেদক: দু’টি সেতু বদলে দিবে কয়েক লাখ মানুষের জীবনযাত্রা। আলোকিত করে তুলবে হোমনা, মেঘনা, তিতাস, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাত শতাধিক গ্রাম। বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায়। 

সবমিলে স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিয়েছে নদীবেষ্টিতে মেঘনা উপজেলা কাঁঠালিয়া ও পারারবন্দ নদীর উপর নবনির্মিত সেতু দু’টি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বৃহৎ জনগোষ্ঠীর চাহিদার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে শুরু হওয়া সেতু দু’টি নির্মান কাজে বাস্তাবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। 

মেঘনা উপজেলা বলতে নদীবেষ্টিত ১০৪টি গ্রামকেই বুঝাতো। কৃষিনির্ভর লাখো জনগোষ্ঠীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌপথ। প্রায় ১৭ বছর আগে দাউদকান্দি উপজেলা থেকে ৪টি ও হোমনা উপজেলা থেকে ৩টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয় মেঘনা উপজেলা। পরবর্তীতে ভাওখোলা ইউনিয়কে ভেঙ্গে দুইটি ইউনিয়নে রূপান্তরিত করা হয়। যা বর্তমানে ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে মেঘনা উপজেলা গঠিত। 

মেঘনা উপজেলার লোকজনকে প্রয়োজনীয় কাজে কুমিল্লা সদরে বা রাজধানী ঢাকাতে যেতে হলে নৌপথে ইঞ্জিন নৌকা বা ট্রলারের সাহয্যেই যাতায়াত করতে হতো। নৌপথের যাতায়াতে ব্যবহার হতো কাঁঠালিয়া ও পারারবন্দ নদী। এ দু’টি নদী মেঘনা উপজেলাকে সবদিকে থেকে পৃথক করে রেখেছিল। 

উপজেলা গঠনের পর ওই জনপদের মানুষের আশা ছিল কাঁঠালিয়া পারারবন্দ নদীর উপর একদিন সেতু নির্মান হবে। অবশেষ ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার মধ্য দিয়ে সেই আশা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। 

মেঘনা উপজেলার প্রায় একলাখ মানুষের আশায় বুক বেঁধে থাকা বহুদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের পথ ধরে হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাঞ্ছারামপুরের কয়েক লাখ মানুষে জীবনযাত্র বদলে দিচ্ছে হোমনা-মানিকারচর-মেঘনা সড়কে কাঁঠালিয়া নদীর উপর ২৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪১৮ মিটার দীর্ঘ একটি এবং একই উপজেলার হোমনা-মানিকারচর-মেঘনা সড়কে পারারবন্দ নদীর উপর ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩০৪ মিটার দীর্ঘ আরেকটি সেতু। 

সেতু দু’টি নির্মান হওয়ায় মেঘনা উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী হোমনা, তিতাস, মুরাদনগর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুরের অন্তত আট লাখধিক লোকের দীর্ঘদিনের যাতায়াত দুর্ভোগ দূর হয়ে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। 

কৃষিনির্ভর ওই সব উপজেলাগুলো উৎপাদিত কৃষিজাত পন্য। বিভিন্ন স্থানে সহজে বাজারজাতের সুযোগ সৃষ্টির মধ্যদিয়ে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। 

কেবল তাই নয়, চরাঞ্চলের মানুষগুলো উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য সহজে যেতে পারবে কুমিল্লা অথবা ঢাকায়। এছাড়াও নবনির্মিত ওই দু’টি সেতুকে ঘিরে ওইসব উপজেলার শিক্ষা ও সাস্কৃতিক কর্মকান্ডের জায়গাটিও হয়ে উঠবে সমৃদ্ধ।
কুমিল্লায় স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করলো স্বামী

কুমিল্লায় স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করলো স্বামী


নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার চিতড্ডা ইউনিয়নের ওড্ডা গ্রামে শাহিনুর (২২) নামের এক তরুনীকে জবাই করে হত্যা করেছে তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন(৩৫)। সোমবার (২৯ জুন) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার পাঠানপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের কন্যা শাহিনুর আক্তারের সাথে ওড্ডা গ্রামের তাবারক হোসেনের পুত্র দেলোয়ার হোসেন এর সাথে তিন বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দেলোয়ার হোসেন তেমন কাজকর্ম করত না। দেলোয়ার শাহিনুরকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য প্রায় সময় চাপ দিতো। এই নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই তাদের মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। ঘটনার দিন সোমবার রাতে দেলোয়ার ও শাহিনুরের মাঝে এসকল বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঘাতক দেলোয়ার চাপাতি দিয়ে স্ত্রী শাহিনুর আক্তার কে গলা কেটে হত্যা করে।
ঘটনা বুঝতে পেরে বাড়ীর লোকজন এর চিৎকারে গ্রামবাসী এসে ঘাতক দেলোয়ার হোসেনকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহত শাহিনুর আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। পরে ঘাতক দেলোয়ার হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত শাহিনুর তাসফিয়া নামের এক কন্যা সন্তানের জননী। সে বরুড়া সরকারি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী ছিলো।
এদিকে নিহত শাহিনুরের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-৩৫, তাং- ৩০/০৬/২০১৫।
এ বিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।