11 December 2013

সুফি সাধক রমযান আলী ফকির

সুফি সাধক রমযান আলী ফকির



সুফি সাধক রমযান আলী ফকির, তিনি নি: সন্দেহে একজন আল্লাহ পাকের  অলি ছিলেনতিনি কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার অন্তর্গত এতবার পুর ইউনিয়নের এতবারপুর গ্রামে ( প: পাড়ায়) সর্বপ্রথম একটি মক্তব স্থাপন করে সেখান থেকে মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিতে থাকেনতিনি   মানুষকে শুধু  ইসলামের দাওয়াত দিয়েই ক্ষান্ত হননী , তিনি সকল মুসলমানকে ধর্মীয় রীতি নীতি  এবং কিভাবে মানুষ আল্লাহর সান্যিধ্য লাভ করতে পারে তাও শিক্ষা দিতেন

            কথিত আছে যে, এতবারপুর গ্রামটির এবং আশে পাশের গ্রাম গুলি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা ছিল, তখনকার সময়ে আল্লাহর অলি রমযান আলী ফকিরের কারামতি এবং আদর্শ দেখে হাজার হাজার মানুষ তাদের ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেপ্রকাশ আছে যে, রমযান আলী ফকির সাহেব যেখানে বসে মানুষকে ইসলামের কথা বলতেন সেখানেই আজ তিনি চির নিদ্রায় সায়িত আছেন

        এখানে দুর দুরান্ত খেকে হাজার হাজার মানুষ প্রতি শুক্রবার এসে জুমার নামাজ আদায়, এই মহা মানবের মাজার জিয়ারত এবং তাদের যাবতীয় মানত পুরন করে থাকেনযত ধর্মপ্রান মুসলমান এখানে মানত করেছেন তাহাদের উক্তি হলো রমযান আলী ফকির সাহেব একজন জিন্দা অলি, আমরা যাহাই মানত করি আল্লাহ পাক এই জিন্দা অলির উচিলায় তা পুরন করে দেন

       সুফি সাধক রমযান আলী ফকির সাহেব ছিলেন ক্বাদরিয়া তরিকা ছাড়া ও বাকী সব তরিকার সাধকএই মহা মানব দীর্ঘ ৮৯ বছর ইসলামের খেদমত করার পরে ১৯০৫ ইং রেজি ইন্তেকাল করেন- ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন

10 December 2013

কুমিল্লা বিভাগ চাই

কুমিল্লা বিভাগ চাই


বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ১৭৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত, গোমতী নদীর তীরে অবস্থিত প্রাচীন ও ঐহিত্যবাহী জেলার নাম কুমিল্লাযা দেশের দ্বিতীয় আবাসিক রাজধানী হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতকিন্তু বর্তমানে দেশের অন্য অনেক জেলার তুলনায় উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে এই জেলাটি বৃহত্তর জেলা সিলেট ও বরিশাল এবং রংপুর বিভাগ হলেও এ সুপ্রাচীন জেলাটি এখনও বিভাগ হয়নি

বৃহত্তর কুমিল্লার প্রায় এক কোটি মানুষের প্রাণের দাবি, কুমিল্লা জেলাকে বিভাগ ঘোষণা করা হোকপ্রাচীন সমতট অঞ্চল যা বর্তমানে বৃহত্তর নোয়াখালী ও বৃহত্তর কুমিল্লা নামে পরিচিত, এই বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা অর্থাৎ নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই ছয় জেলা নিয়ে চাই কুমিল্লা বিভাগ গঠন।।এই ছয় জেলা নিয়ে কুমিল্লাকে বিভাগ করা হলে এই বিভাগের আয়তন হবে ১৩,৩০২ বর্গ কি. মি. যাহা আয়তনে সিলেট ও বরিশাল বিভাগের চাইতেও বড় হবেএই ছয় জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ গঠিত হলে এ প্রস্তাবিত বিভাগের জনসংখ্যা হবে প্রায় পৌনে দুই কোটি যাহা সিলেট ও বরিশাল বিভাগের জনসংখ্যার চেয়ে দুই গুনেরও বেশীআর তাছাড়া ১৮২৯ সালে যখন চট্টগ্রাম বিভাগ গঠিত হয় তখন বর্তমান বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ২ কোটির কাছাকাছিআর এখন শুধু বৃহত্তর নোয়াখালী ও বৃহত্তর কুমিল্লার জনসংখ্যাই হচ্ছে প্রায় পৌনে দুই কোটিসুতরাং বর্তমানে বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের এ বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে বিভাগীয় সেবা দিতে বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীকে নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ গঠন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছেসর্বশেষ আদমশুমারী ২০১১ অনুসারে বরিশাল বিভাগের জনসংখ্যা মাত্র ৮৪ লক্ষ আর অথচ বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীর জনসংখ্যা হচেছ ১ কোটি ৭০ লক্ষ, যাহা বরিশাল বিভাগের জনসংখ্যার দ্বিগুনমাত্র চারটি জেলা নিয়ে সিলেটকে যেখানে বিভাগ করা হয়েছে, সেখানে ছয়টি জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ গঠন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত এবং সময়োপযোগী দাবি বটেসুতরাং জনসংখ্যা ও আয়তন উভয় দিক বিচারে বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর নোয়াখালীকে নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ গঠন অত্যন্ত যুক্তিসংগত দাবিআর তাতে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে অত্র অঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষ খুব সহজে বিভাগীয় সেবা পেতে সক্ষম হবেনোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এই ছয় জেলার মানুষকে বর্তমানে বিভাগীয় কাজকর্ম সারতে বহু কষ্ট এবং সময় ও অর্থ নষ্ট করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক ভোগান্তি সহ্য করে চট্টগ্রামে যেতে হয়, যা নিছক হয়রানি বটেউল্লিখিত ছয় জেলাকে নিয়ে কুমিল্লাকে বিভাগ করা হলে এ ছয় জেলার দুই কোটি মানুষকে চাকরির পরীক্ষাসহ বিভাগীয় অন্যান্য কাজে বহু কষ্ট করে সময় নষ্ট করে অর্থের অপচয় ঘটিয়ে চট্টগ্রামে যেতে হবে না
সুতরাং ভৌগলিক অবস্থান এবং উল্লিখিত ছয় জেলার মধ্যখানে বিবেচনায় কুমিল্লা বিভাগ গঠন এখন একান্তই যৌক্তিক দাবিবাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে দরকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি, বেসরকারি তথ্য ও সেবা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া বা মাধ্যম সৃষ্টি করাএর মধ্য দিয়ে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সুষম উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় এবং তৃণমূলের জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটেআর এই অঞ্চলের তৃণমূলের মানুষের ক্ষমতায়নের জন্যই বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের জনগণের বর্তমান সময়ের দাবি হচ্ছে, প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করাকুমিল্লাকে বিভাগ করা হলে অত্র উপকূলীয় অঞ্চল কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুত হবে এবং এখানকার জনগনের অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে বলে অত্র অঞ্চলের মানুষ মনে করেপরিশেষে জনসেবার জন্য প্রশাসন এবং জনমুখী প্রশাসন গড়ে তুলতে ঢাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুপ্রাচীন জেলা কুমিল্লাকে উল্লিখিত ছয় জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করার জন্য বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় যোগাযোগ ও রেলপথমন্ত্রী, এবং মাননীয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সহ সংশিষ্ট সকল মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

09 December 2013

দেবিদ্বার এলাহাবাদের উটখাড়া মাজার

দেবিদ্বার এলাহাবাদের উটখাড়া মাজার

ফকির- দরবেশ- আউলিয়ার দেশ বাংলাদেশবার আউলিয়া চট্রগ্রামে, তিনশত  ষাট আউলিয়া সিলেটে আর তিনশত আউলিয়ার বিচরণ ভূমি  কুমিল্লাএসম্পর্কে বিশিষ্ট লেখক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস লিখেছেন-
"লাকসামেতে শাহ শরীফ
 কুমিল্লায় আব্দুল্লহ
ঘুমিয়ে আছে জেলার মাঝে তিনশ' আউলিয়া।"
ইসলামী গবেষক ও চিন্তাবিদদের মতে  কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার ইসলাম ধর্ম প্রচারে হজরত শাহ কামাল (রঃ) ও হজরত শাহ জামাল (রঃ)'র অবদান স্মরণীয়তবে এক্ষেত্রে দেবিদ্বার ইসলাম ধর্ম প্রচারে কে সর্বপ্রথম এসেছিলেন তার কোন সঠিক দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নিতবে কেউ কেউ মনে করেন ৬৭০ হিজরি ও ১২৭১ খ্রীস্টাব্দে ইয়েমেনে জন্ম গ্রহণকারী কোরেশ বংশোদ্ভুত বিশিষ্ট অলী শায়খ মাহামুদ (রঃ)'র পুত্র হজরত শাহজালাল (রঃ) ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ইয়েমেন থেকে ১২জন সফর সঙ্গী নিয়ে ভারতবর্ষের দিকে রওয়ানা হয়ে ১৩০০ খ্রীস্টাব্দে দিল্লীতে আসেনদিল্লী থেকে ১৩১৫ খ্রীস্টাব্দে বাংলাদেশের সিলেটে (শ্রীহট্ট) আসা পর্যন্ত তার সফর সঙ্গী হন ৩৫৯ জন, এবং তিনিসহ ৩৬০জন কারো কারো মতে ৩১৩ জন আউলিয়া ছিলেনউনার জন্ম ৬৭০ হিজরী ও ১২৭১ খ্রীস্টাব্দে এবং ৭৬ বছর জীবদ্দশার পর অর্থাৎ ৭৪৬ হিজরী ও ১৩৪৭ খৃষ্টাব্দে তিনি সিলেটেই ইন্তেকাল করেনসিলেট অঞ্চলে ৩২ বছর স্থায়ীভাবে বসবাস ও ইসলাম ধর্ম প্রচার করেনইসলাম ধর্ম প্রচারে তার শিষ্যদের ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করেনহজরত শাহজালাল (রঃ)'র আগমণেরও প্রায় দু'শত বছর পূর্বে অর্থাৎ ১১১২ সালে ইয়েমেন থেকে আসা শাহ্ মোহাম্মদ আব্বাস হুসাইনী নামক একজন দরবেশ কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার গ্রামে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছেতাঁর বংশধরগণ এখনো বংশ পরষ্পরায় এখানে বসবাস করছেন

হজরত শাহজালাল (রঃ)'র আগমন, তার সাথে আসা ৩৫৯ আউলিয়া এবং পরিবর্তিতে শিষ্যত্ব গ্রহণকারী আউলিয়াদের অবস্থান, পরিচিতি, সময়কাল ও মাজার নিয়ে ইসলামি গবেষক ও চিন্তাবিদ-দের মধ্যে বিতর্ক ও অনেক মতানৈক্য রয়েছেতাছাড়া এ অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচারে আসা ৩৬০ আউলিয়ার পরবর্তী ধাপে আসা অনেকে বুজুর্গ আউলিয়াই হজরত শাহজালাল (রঃ)'র শিষ্যত্ব গ্রহণপূর্বক তাদের কেরামতি, সুনাম-সুখ্যাতি নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শায়িত আছেন

হজরত শাহজালাল (রঃ)'র দ্বিতীয় পর্যায়ে শিষ্যত্ব গ্রহণকারী (৩৫৯ আউলিয়ার পরে) দেবিদ্বার এলাহাবাদের উটখাড়া'র শাহ্ কামাল (রঃ)'র কথা জানা যায়  দেবিদ্বারে এদের আগমন কত হিজরী বা সনে ঘটেছে তার কোন সঠিক তারিখ পাওয়া যায়নিঅনুমান করা হচ্ছে ত্রয়োদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকের শেষ দিকে হজরত শাহজালাল (রঃ)'র শিষ্য ও প্রধান সিপাহ সালার হজরত নাছিরউদ্দিন শাহ্ (রঃ)' সাথে শ্রীহট্টের (সিলেট'র) অত্যাচারী রাজা গৌড়গোবিন্দ রায় এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়, ওই যুদ্ধে গৌড়গোবিন্দ পরাজিত হন

ওই সময় সম্ভবতঃ ত্রয়োদশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের প্রথম দিকে হজরত শাহজালাল (রঃ)এর শিষ্যদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দেখা দিলে তার দুই শিষ্য হজরত শাহ্ কামাল (রঃ), হজরত শাহ্ ইসরাঈল (রঃ)কে ইসলাম ধর্ম প্রচারে অন্যত্র যাওয়ার নির্দেশ দেনকোথায় গিয়ে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করবেন, তার কোন নির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণ না করে দিলেও তাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল, তাদের এই বাহন উটই তাদের দ্বীন প্রচার কেন্দ্র নির্দিষ্ট করে দেবে, তাদের বহনকারী বাহন উট যেখানে গিয়ে থেমে যাবে বা উটের পা বালি কিংবা মাটিতে গেড়ে যাবে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন ও ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করবে

কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে এসে বালিতে উটের পা গেড়ে গিয়ে উট থেমে গেলে তারা এখানেই বসতি স্থাপন ও ইসলাম ধর্মপ্রচার শুরু করেনবর্তমানে এলাহাবাদ গ্রামের ওই জায়গাটি উটখাড়া (গ্রামের পরিচয়ে) মাজার নামে পরিচিত এবং এ অঞ্চলে আল্লাহ্''আবাদ' প্রচার ও প্রসার শুরু করায় উটখাড়াসহ বিশাল এলাকা আল্লহর আবাদ থেকে কালক্রমে 'এলাহাবাদ' নামে পরিচিতি লাভ করেউটখাড়া মাজারটি  কুমিল্লা জেলা সদর থেকে  কুমিল্লা-সিলেট মহা সড়ক হয়ে প্রায় ২৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং দেবিদ্বার সদর থেকে পূর্ব-দক্ষিণে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত

কারো কারো মতে হজরত শাহ্ কামাল (রঃ)'র সাথে হজরত শাহ্ জামাল (রঃ) এখানে (এলাহাবাদ গ্রামের উটখাড়া) থেকে যান এবং হজরত শাহ্ কামাল(রঃ)'র অপর দু'সফর সঙ্গী হজরত শাহ্ ইসরাইল (রঃ) ও হজরত শাহ্ মোহাম্মদ নুরুদ্দিন (রঃ) পাশ্ববর্তী বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা গ্রামে চলে যানহজরত শাহ্ জামাল (রঃ) হজরত শাহ্ কামাল (রঃ) সম্পর্কে সহোদর বলেও জানা যায়আর শাহ্ ইসরাঈল (রঃ) এবং শাহ্ নুরুদ্দিন (রঃ) সম্পর্কে মামা ভাগ্নেশাহ্ ইসরাঈল (রঃ)'র ভাগ্নে ছিলেন শাহ্ নুরুদ্দিন (রঃ)উল্লেখ্য শাহ্ ইসরাঈল(রঃ) ও শাহ্ নুরুদ্দিন (রঃ)'র মাজার  কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বুড়িচং উপজেলার কংশনগর বাসস্ট্যান্ড হতে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে ভারেল্লা গ্রামে অবস্থিত

মৌলানা ছৈয়দ শাহ্ শেরআলী (রঃ)'র লিখা 'ছহি জোয়াহেরে মারফত ও শেরগঞ্জ' গ্রন্থে ত্রিপুরা(বর্তমান  কুমিল্লা)'র পাইটকারা ভারেল্লা গ্রামের দু'আউলিয়া হজরত শাহ্ কামাল (রঃ) হজরত শাহ্ ইসরাঈল (রঃ); হজরত শাজালাল (রঃ)'র সাথে আসা ৩৫৯ আউলিয়ার সাথী ছিলেন নাতারা (হজরত শাহ্ কামাল (রঃ), শাহ্ ইসরাঈল (রঃ) ও হজরত শাহ্ নুরুদ্দিন (রঃ)) হজরত শাজালাল (রঃ)'র পরবর্তী দ্বিতীয় পর্যায়ে শিষ্যত্ব গ্রহনপূর্বক তারই নির্দেশে এদেশে এসে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন

খান বাহাদুর আফজালুর রহমান স্টেট-এর আওতায় হজরত শাহ্ ঈসরাফিল (রঃ) উটখারা ওয়াকফ ষ্ট্যাট'র নামে নিজস্ব সম্পত্তি ছিল প্রায় একশত এগার একরকালক্রমে ওই জায়গা বেদখল হয়ে বর্তমানে প্রায় তেইশ একর বার শতক জমি থাকলেও মাজারের নামে ওয়াক্ফ করা হয়েছে আরো কমমাত্র দশ একর সাতাশি শতক ওয়াক্ফকৃত জায়গায় মাজারের অংশ তেইশ শতক ছাড়া বাকী প্রায় দশ একর চৌষট্টি শতক সম্পত্তি বেদখল হয়ে আছেওই জায়গায় একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি সমাজ কল্যাণ অফিস ও একটি দিঘি ও একাধিক ছোট পুকুর রয়েছে মাজারে ৪১টি কবর আছেতবে বংশানুক্রমে হজরত শাহ কামাল (রঃ) ও হজরত শাহ জামাল (রঃ) এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি
অবস্থান: 
দেবিদ্বার সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার পূর্ব দক্ষিণে এবং কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ২৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত


08 December 2013

নূরমানিকচর মসজিদ

নূরমানিকচর মসজিদ

দেবীদ্বারের সবচেয়ে পুরাতন মসজিদ নূরমানিকচর মসজিদ, যার বয়স প্রায় পাঁচশত বছরজানা যায়, পঞ্চদশ শতাব্দীর আগে মরহুম সৈয়দ নূর আহমেদ কাদেরী পীর সাহেব এ মসজিদ নির্মান করে গেছেনসৈয়দ নূর আহমেদ কাদেরী পীর সাহেব'র নামানুসারে ওই গ্রামের নামকরণ করা হয় নূরমানিকচর গ্রাম
আজ থেকে কত বছর আগে দেবীদ্বারে কে বা কারা ইসলামের আলো জ্বেলেছিলেন তার কোন দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নিতবে ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর দিকে খেয়াল করলে সহজেই বুঝা যায় এখানকার মুসলিম সভ্যতা অনেক দিনের পুরনোকারন এক/দু'জন লোক মুসলমান হলে সেখানে পাকা বা অন্যভাবে নিত একটি মসজিদ গড়ে উঠেনাসম্মিলিত ভাবে জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য প্রয়োজন একটি মুসলিম সমাজএমনই একটি মুসলিম সমাজের চিত্র পাওয়া যায় কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার নূরমানিকচর গ্রামে
এখানে নূরমানিকচর মসজিদ নামে দির্ঘ দিনের একটি পুরনো মসজিদ রয়েছেএ মসজিদটি সাতগম্ভুজ বিশিষ্টমসজিদটির দৈর্ঘ্য ১০ফুট, প্রস্থ্য ৫ফুটএকসঙ্গে ২০/২৫জন নামাজ আদায় করতে পারেনচুন-সুরকী দিয়ে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে অপূর্ব কারুকাজ রয়েছেমসজিদের ছাদে রয়েছে ১১টি গম্বুজ, এর মধ্যে মূল ছাদে রয়েছে ৭টি এবং বাকী চারটি গম্বুজ রয়েছে মসজিদের চারকোণায়তবে সংরৰন ও সংস্কারের অভাবে সবকটি গম্বুজই ধ্বংশ প্রায়সুষ্ঠভাবে পরিচর্যা না করায় মসজিদের বাহিরের আসত্দরগুলো নষ্ট হয়ে গেছেঅধিকাংশ জায়গা থেকে আসত্দরগুলো খসে পড়ছেবৃষ্টির পানিতে মসজিদের দেয়ালে সেওলা জমে মসজিদের শ্রী'নষ্ট হয়ে গেছেছাদের অবস্থা আরো খারাপযে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারেনূরমাকিচর মসজিদটি কুমিল্লাশহর থেকে পশ্চিমে ১৮কিলো মিটার দূর এবং 'ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক'র নূরমানিকচর বাস স্টেশনের আধা কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত
স্থানীয়রা জানান, সমসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ নূর আহম্মেদ আল কাদেরী পীর সাহেব একজ ধর্মপ্রাণ ও দানবীর ছিলেনতিনি মসজিদ ছাড়াও ডাকঘর, মক্তব,পাঠশালা, ও দিঘী নির্মান করে গেছেনমসজিদটি রৰা করতে হলে অনতিবিলম্বে এর সংস্কার প্রয়োজনতারা আরো দাবী করেন যে, মসজিদটি মুসুলস্নী সংকুলান না হলেও এটি এ এলাকার ঐতিহ্য